বরিশাল
বরিশালে করোনা আতংকের মধ্যেই বাণিজ্য মেলার আয়োজন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পৃথিবীর প্রায় ৮৫টি দেশ অতিক্রম করে বাংলাদেশেও হানা দিয়েছে করোনা ভাইরাস। বর্তমানে ঢাকায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তিনজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দৃশ্যত ভাইরাসটির কোন প্রতিষেধক তৈরি না হওয়ায় ইতোমধ্যে প্রায় চার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে যা মহামারির সমতুল্য। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকার ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহন করেছে। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে লোক সমাগম এবং জনবহুল স্থান এড়িয়ে চলা। তবে সবকিছু উপেক্ষা করে বরিশালে দি চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির উদ্যোগে বরিশালে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০২০ এর আয়োজন করা হয়েছে। এ মেলার যেকোন সময় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধণ হতে যাচ্ছে। এতে করে শংকিত ও আতংকিত হয়ে পরেছে নগরবাসী। তাদের দাবী, করোনা একটি সংক্রামক ভাইরাস। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে সুপার মার্কেট, কাঁচা বাজার, সিনেমা হল, এমনকি জেলখানা। অর্থাৎ মানুষের ভীড় হতে পারে এমন স্পর্শকাতর স্থানগুলো সস্পূর্নভাবে পরিহার করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বাঙালির বহুল প্রত্যাশিত মুজিব জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধণী অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। একই সাথে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিদেশি অতিথিদের সফরসূচি বাতিল করা হয়েছে। এ পরিস্থিতির মধ্যে বরিশাল চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের বাণিজ্য মেলার আয়োজন নিয়ে সচেতন নগরবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন স্কুল শিক্ষক বলে, মেলা মানেই দর্শনার্থীদের উপচেপরা ভীড়। মেলা মানেই বদ্ধ স্থানে হাজারো মানুষের উপস্থিতি। যেখানে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গণপরিবহন পর্যন্ত এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে, সেখানে মেলা আয়োজনের মাধ্যমে অনেক মানুষকে একস্থানে জড়ো করার আয়োজন করোনা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে প্রতিরোধের জন্য হুমকি স্বরূপ। তিনি আরও বলেন, উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি অনুকূলে না আসা পর্যন্ত আমি এই মেলা বন্ধ রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে জোর দাবি করছি। এ বিষয়ে নগরীর এপেক্স হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ডাঃ এসএম আরিফুর রহমান ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপালের মেডিকেল অফিসার মোস্তফা কামাল বলেন, অন্যান্য ভাইরাস থেকে করোনা ভাইরাস একটু আলাদা। এটির ওজন আছে। তাই এটি বাতাসে ভাসেনা। মানুষের হাত কিংবা শরীরে মিশে থাকে। তাই এটি প্রতিরোধে যেকোন ভীড় এবং জনসমাগমের স্থান এড়িয়ে চলা উচিত। জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মনোয়ার হোসেন বলেন, বাণিজ্য মেলার বিষয়ে আমাদের কাছে কোন সরকারি নির্দেশনা আসেনি। তাই সিদ্ধান্তও জানাতে পারছিনা। তবে বেশি লোক সমাগমের স্থানে অবস্থান না করার জন্য আমরা বেতার টেলিভিশন ছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি এবং তা অব্যাহত থাকবে। বরিশালের জেলা প্রশাসক এস.এম অজিয়র রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বাণিজ্য মেলা আয়োজনের বিষয়টি আমি অবগত নই। বিষয়টির খোঁজখবর নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হবে।