বরিশাল
জুলাই আন্দোলনে পুলিশের লাঠিচার্জের পর এখনো সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেননি সাংবাদিক শামীম!
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালে জুলাই আন্দোলনে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে লাঠিচার্জের ছবি তুলতে গিয়ে পুলিশের হামলার শিকার হন ফটো সাংবাদিক শামীম আহমেদ। এরপর থেকে এই সাংবাদিক শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণার এক পর্যায়ে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হন। এখনও তাঁর চোখে-মুখে ভয়াল আতঙ্কের ছাপ। কাটাচ্ছেন দুর্বিষহ দিন। এ অবস্থায় তার উন্নত চিকিৎসার দাবি পরিবারের।
গত বছর ৩১ জুলাই বরিশাল নগরী ছিল আন্দোলনে উত্তাল। সেদিন ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জের ছবি তুলতে গিয়ে পুলিশের হামলায় আহত হন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। তাদের মধ্যে দৈনিক যুগান্তরের ফটো সাংবাদিক শামীম আহমেদ একজন।
সেদিন শামীমের শরীর ও মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে পুলিশ। সেই ঘটনার পর আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেননি তিনি। এরপরে কয়েকবার হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে দিন কাটাচ্ছেন এই সাংবাদিক।
জুলাই আন্দোলনে আহত সাংবাদিক শামীম আহমেদ বলেন, ‘আমি সঠিক চিকিৎসাটাও করাইতে পারি নাই। আর ওই মাইরের টেনশন আমার মাথায় এমন প্রভাব বিস্তার করে, যে কারণে এরপর আমি নিউরোলজি রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ি।’
তাকে নিয়মিত থেরাপি দেওয়া হচ্ছে। তার এমন অসুস্থতার পর চিকিৎসা ও অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় তার পরিবার।
আহত সাংবাদিক মেয়ে সাহারা আহমেদ বলেন, ‘আমাদের আব্বু ছাড়া আমাদের আর রোজগার করার কেউ নাই। তার অফিসের কর্মকর্তারা তার বেতন কতদিন বহন করবেন তা আমরা জানি না। এখন সরকারের সাহায্য সহযোগিতা ছাড়া এখন আমাদের চলার উপায় নাই।’
প্রবীণ এই সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানান সাংবাদিক নেতারা। তারা জুলাই আন্দোলনে আহত সাংবাদিকের আর্থিক সহায়তার দাবি জানান।
বরিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম খসরু বলেন, ‘শামীম আজকে খুবই অসহায় অবস্থায় আছে। তিনি যাতে বর্তমানে বাংলাদেশের সরকারের কাছে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সাহায্য সহযোগিতা পান সেই দাবি করছি আমি।’
এদিকে প্রশাসন বলছে, জুলাই আন্দোলনে হতাহতদের সর্বাত্মক সহযোগিতার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং তাদের সহায়তা করা হচ্ছে।
বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কাওছার বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কাছে চেক পাঠিয়েছে, আমরা টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিয়েছি। একদম সরাসরি অ্যাকাউন্টে চলে গেছে। এগুলা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে গৃহীত পদক্ষেপ। এটা ছাড়া স্থানীয়ভাবে কিন্তু আমরা অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’
জুলাই আন্দোলনে বরিশালের ৩০ জন বিভিন্ন স্থানে শহীদ হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় সাড়ে তিন শ মানুষ।