বরিশাল
বিএনপি নেতার ‘দখল করা’ বরিশাল চেম্বার অব কমার্সের প্রশাসক নিয়োগ
গণ-অভ্যুত্থানের পর ‘দখল হয়ে যাওয়া’ বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিতে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। আদেশে বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (শিক্ষা ও আইসিটি) চেম্বারের প্রশাসকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বরিশাল জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি এবায়দুল হক চানের বিরুদ্ধে চেম্বার দখলের অভিযোগ ওঠে। তিনি এত দিন সভাপতি হিসেবে ছিলেন।
আজ মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) রেহান উদ্দিন স্বাক্ষরিত আদেশ থেকে জেলা প্রশাসক নিয়োগের তথ্য জানা গেছে।
আদেশে প্রশাসককে আগামী চার মাসের মধ্যে গঠনতন্ত্র মেনে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নবনির্বাচিতদের দায়িত্ব হস্তান্তর করতে বলা হয়েছে।
এর আগে গঠনতন্ত্র অমান্য করে পকেট কমিটি হয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন চেম্বারের একাধিক সদস্য। চেম্বার সদস্যদের অভিযোগ, লোক দেখানো একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে চেম্বারটি দখলে নিয়েছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বরিশাল জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবায়দুল হক চান। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে চেম্বারের বেশ কয়েকজন সদস্য মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেন। তাতে গঠনতন্ত্র না মেনে পকেট কমিটি করার অভিযোগে করা হয়।
তদন্ত শেষে দেওয়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশে বলা হয়েছে, সাধারণ সদস্যদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সভাপতি এবায়দুল হক চান সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি সাধারণ সদস্যদের সঙ্গে সংগঠনের সার্বিক কার্যক্রম সমন্বয় করে শেষ করতে পারছেন না। চলমান অস্থিরতা, অসন্তোষ ও সমন্বয়হীনতার কারণে বাণিজ্য সংগঠন আইন ২০২২-এর ১৭(১) ধারা অনুযায়ী সংগঠনটি ব্যবসা, শিল্প, বাণিজ্য ও সেবা খাতের স্বার্থে কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না।
আদেশে আরও বলা হয়, সংগঠনটির চলমান অস্থিরতা ও অসন্তোষ দূর করতে বাণিজ্য সংগঠন আইন ২০২২, বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা ১৯৯৪ এবং সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পরিচালিত হওয়া দরকার। বাণিজ্য সংগঠন আইন ২০২২-এর ১৭ ধারা অনুযায়ী সংগঠনটির বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি বাতিল করা হলো।
এ প্রসঙ্গে চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি ব্যবসায়ী আ. রহিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিএনপি নেতা চান অবৈধভাবে চেম্বার দখল করেছিলেন। এরপর একটি পাতানো নির্বাচন কমিশন দিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের মধ্যে পদ ভাগাভাগি করেন। সরকার খতিয়ে দেখে বরিশাল চেম্বার অব কমার্সে একজন প্রশাসক বসিয়ে দিয়েছেন।
জানতে বিএনপি নেতা এবায়দুল হক চানের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি তা ধরেননি।
চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক হিসেবে পরিচয় দেওয়া জি এম আতায়ে রাব্বিকে মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি আদেশের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান।
এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর আজকের পত্রিকায় ‘চেম্বারের নেতৃত্ব নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষে দ্বন্দ্ব’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।