বরিশাল
নিয়ম ভেঙে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অভিযোগ ববি উপাচার্যের বিরুদ্ধে
নিজস্ব প্রতিবেদক : নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত পদে নিয়মবহির্ভূতভাবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন ফের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছেন। এর আগেও উপাচার্য নিয়মবহির্ভূতভাবে পিএ টু ভিসি পদে নিয়োগ দেন।
এবার উপাচার্য পিএ টু রেজিস্ট্রার পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরে পিএ টু রেজিস্ট্রার পদে শিউলি আক্তার নামের একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০২৪ মালের মার্চে পিএ টু ভিসি ও পিএ টু রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় এবং ঐ পদগুলোতে আবেদনও করেছেন চাকরি প্রত্যাশীরা। কিন্তু তাদের মধ্য থেকে নিয়োগ না দিয়ে নিয়ম ভেঙ্গে চুক্তিভিত্তিকভাবে নিয়োগ দিয়েছেন উপাচার্য।
শিক্ষক-কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হলে ইউজিসির নীতিমালা অনুযায়ী প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের অনুমোদন নিতে হয়। এর পর ইউজিসির অনুমোদন সাপেক্ষে অন্তত দুটি জাতীয় দৈনিকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হয়। তবে এ সব নির্দেশনা তোয়াক্কা না করেই উপাচার্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিচ্ছেন একের পর এক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামের কাছে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
জানা গেছে, লাকি আক্তার রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী। এর আগেও ২৬ ফেব্রুয়ারি নিয়ম ভেঙ্গে পিএ টু ভিসি পদে নিয়োগ দেওয়া হয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়েরই ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিব হোসেনকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, বেরোবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক কলিমুল্লাহর কথায় ববি উপাচার্য এই দুই শিক্ষার্থীকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছেন।
এ ছাড়া সম্প্রতি অবসরপূর্ব ছুটিতে (পিআরএল) যাওয়া রেজিস্ট্রারকেও ছুটি স্থগিত করে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম ১ ফেব্রুয়ারি পিআরএলে যান। অভিযোগ রয়েছে, তাকেও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের চেষ্টা চলছে।
নিয়ম ভেঙ্গে এভাবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক রাকিব আহমেদ বলেন, ‘আমরা বিষয়টির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আরেকটি বিষয় প্রতিটি বিষয়ে উপাচার্যের সাথে কলিমুল্লাহর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাচ্ছে এ বিষয়েও আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিষয়ে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. মামুন অর রশিদ একটি ফাইলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া পদগুলোতে বেতন দেওয়া সম্ভব না জানিয়ে মন্তব্য করেন। এর জবাবে উপাচার্য মন্তব্য করেছেন এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ট্রেজারারের এখতিয়ার বহির্ভূত।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. মামুন অর রশিদ বলেন, ‘চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিষয়ে উপাচার্যকে আপত্তি জানিয়েছি নিয়োগগুলো নিয়মবহির্ভূত হচ্ছে। উপাচার্য তার পছন্দের লোককে নিয়োগ দিতেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিচ্ছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত উপাচার্য নিজে বলতে পারবেন বলে জানান তিনি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রাব্বানী জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু স্টাফকে এখনো স্থায়ী করা হয়নি তাদেরকে বা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ তিনি সমর্থন করেন না। এ বিষয়ে জানার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনকে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি।