বরিশাল
বরিশালে ওটিপি জটিলতায় চরম দুর্ভোগে টিসিবির সুবিধাভোগীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালে নির্ধারিত সময়ের এক দিন পর পণ্য বিক্রি শুরু হলেও ওটিপি জটিলতায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন টিসিবির দরিদ্র সুবিধাভোগীরা। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দিনভর নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে এমন দুর্ভোগ দেখা যায়। এ কারণে অধিকাংশ সুবিধাভোগীকে পণ্য না নিয়েই বাড়ি ফিরতে হয়েছে। পাশাপাশি দুর্ভোগে পড়েছেন ডিলাররাও।
বরিশাল নগরীতে ৯০ হাজার ফ্যামিলি কার্ডের মধ্যে যাচাই শেষে ৩১ হাজার ২৭৪টি কার্ডে সেবা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে নতুন করে স্মার্ট কার্ড প্রদান শেষে মালিকানা যাচাইয়ে ওটিপির ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু দুই-তিন ঘণ্টা পরও মোবাইল ফোনে ওটিপি না আসায় সেবাগ্রহিতারা দুর্ভোগে পড়েছেন।
টিসিবির পণ্য নিতে আসা একজন ক্রেতা বলেন, ‘স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির সময় ওটিপি ব্যবহার করতে হচ্ছে। কিন্তু টিসিবির অ্যাপে স্মার্ট কার্ড স্ক্যান করার দুই-তিন ঘণ্টা পরও ওটিপি আসছে না। তাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও আমি পণ্য পাইনি।’
নগরীর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ডিলার মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার আরিফুর রহমান বলেন, ‘সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মাত্র ৩৯টি কার্ডের বিপরীতে পণ্য দিতে পেরেছি। আমার আওতায় ২৮৮টি কার্ড থাকলেও ওটিপি না আসায় অধিকাংশ সেবাগ্রহিতাকে পণ্য দিতে পারিনি। একই ওয়ার্ডে আরও তিনটি টিসিবির ডিলার পয়েন্টে একই অবস্থা দেখা গেছে।’
নগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাস্টার ফুড প্রোডাক্টসের এক কর্মচারী বলেন, ‘মোবাইল ফোনে ওটিপি না আসায় ২৪৭ জন কার্ডধারীর মধ্যে পুরো দিনে মাত্র ২৯ জনকে পণ্য দিতে পেরেছি। বাকিরা এসেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা শেষে ফিরে গেছেন।’
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শতদল মন্ডল বলেন, ‘অনেকের বাটন মোবাইলের ইনবক্স ফুল হয়ে থাকার কারণে নতুন মেসেজ মোবাইল ফোনে প্রবেশ করছে না। এছাড়া কিছু নম্বরে ওটিপি আসতে দেরি হচ্ছে। যারা পণ্য পায়নি, তারা দুএক দিন পর নিলেও সমস্যা নেই। পণ্য বেহাত হওয়ার কিছু নেই, পরবর্তী বরাদ্দ না আসা পর্যন্ত পণ্য নেওয়া যাবে। সাময়িক এ দুর্ভোগের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।’
প্রসঙ্গত, বরিশাল নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ আমলে ৯০ হাজার ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ হয়েছিল। ভুল তথ্য দেওয়া, একই মোবাইল নম্বরে একাধিক কার্ড করা সহ বিভিন্ন অনিয়মের কারণে অধিকাংশ কার্ড বাতিল হয়ে যায়। ত্রুটি যুক্ত কার্ড বাতিল করার পর বর্তমানে নগরীতে ৩১ হাজার ২৭৪টি কার্ডের বিপরীতে দরিদ্রদের সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এর আওতায় ৫৪০ টাকায় একজন সুবিধাভোগীকে ৫ কেজি চাল, ২ লিটার তেল, ২ কেজি ডাল এবং ১ কেজি চিনি দেওয়া হচ্ছে।