বরিশাল
বরিশাল বিভাগের ৪২ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল বিভাগের ৪২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে অ্যান্টি র্যাবিস ভ্যাকসিন (এআরভি) নেই। প্রতিদিনই কুকুরে কামড়ানো অসংখ্য রোগী ভ্যাকসিনের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলেও ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকায় তাদের বাধ্য হয়ে চড়া দামে ফার্মেসি থেকে কিনতে হচ্ছে। এই সংকট শিগগিরই সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা না থাকায় বরিশাল বিভাগের জনগণের মধ্যে হতাশা বাড়ছে।
জানা গেছে, বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভ্যাকসিন সংকটের তথ্য এক রকমই। সরকারের সরবরাহে অপ্রতুলতা থাকার কারণে খোলা বাজারে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এতে প্রতিদিনই সাধারণ মানুষ প্রতারিত হচ্ছে।
বরিশাল নগরীর ভাটিখানা এলাকার বাসিন্দা শুভজিত জানান, তার থেকে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজের দাম ১৫০০ টাকা নিলেও পরবর্তী ডোজের দাম বেশি চায়। কারণ ফার্মেসি মালিকরা জানে রোগীকে ডোজ কমপ্লিট করতে হবে।
বরগুনার আমতলী উপজেলা সদরের স্কুলছাত্রী সীমা বলেন, ‘ক্লাস শেষে বাসায় ফেরার পথে কুকুর কামড়ায়। হাসপাতালে গেলে তারা জানায় সেখানে ভ্যাকসিন নেই। আমাকে পটুয়াখালী অথবা বরগুনা সদর হাসপাতালে যেতে বলা হয়।’
বরিশালের হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. মোহাম্মদ মাজেদুল হক কাওছার বলেন, ‘আমি হিজলা থেকে বদলি হয়ে এসেছি। সেখানেও ভ্যাকসিনের সরবরাহ ছিল না। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চাহিদা জানিয়ে আবেদন করেছিলাম, তবে এখনো কোনো সমাধান হয়নি।’
বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল জানান, গত বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে যে সংখ্যক রোগী এসেছিল, এ বছর তার তুলনায় অনেক বেশি রোগী আসছে। রোগীরা চাহিদামতো ভ্যাকসিন না পেয়ে বাইরে থেকে বেশি দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
বরগুনা জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এ. কে. এম. নজমূল আহসান বলেন, তাদের হাসপাতালে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন রয়েছে, তবে প্রতিদিন আসা রোগীদের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় তা সামলাতে কষ্ট হচ্ছে।
এদিকে ফার্মেসি ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
ভ্যাকসিন সংকটের কথা স্বীকার করে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ বড়াল বলেন, ‘ভ্যাকসিনের সরবরাহ কম থাকায় এবং ব্যয়বহুল হওয়ায় সাধারণ মানুষের জন্য এটি কঠিন হয়ে পড়েছে। বর্তমানে আমরা শুধু জেলা সদর ও সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারছি। আগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরবরাহ থাকলেও আপাতত নেই।’ তবে কবে নাগাদ এই সংকট কাটবে সেটিও বলা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।