বরিশাল
বরিশালে সড়কের অভাবে আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থা বঞ্চিত ২ গ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার গারুড়িয়া ইউনিয়নের হেলেঞ্চা ও সাহেবপুর দুটি গ্রামের মানুষ একটি সড়কের কারণে আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ভরে যাচ্ছে খাল-বিল।
পানি জমে নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ জনপদের কাঁচা রাস্তা। রাস্তায় হাঁটুসমান কাদা। চরম দুর্ভোগ সাধারণ মানুষের। মাত্র এক কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাই যেন গ্রাম দুটির জনসাধারণকে স্মার্ট সুযোগ সুবিধা থেকে শত বছর পেছনে রেখেছে।এ যেন এক অবহেলিত জনপদের অভিভাবকহীন ছিন্নমুল শিশু। যেখানে থাকে না শিশুটির দেখভাল করার মতো কোনো প্রতিনিধি। ঠিক তেমনি বাকেরগঞ্জের এই হেলেঞ্চা ও সাহেবপুর গ্রাম দুটির রাস্তা অবস্থা।
এখানকার মানুষ ঠিকই তাদের ভোটাধিকারের মাধ্যমে নির্বাচিত করে জনপ্রতিনিধি, কিন্তু তা ব্যালট পেপার, সিল এবং স্ট্যাম্প কালির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির থাকেনা জনসাধারণের জীবনমান পরিবর্তনের বিন্দুমাত্র চিন্তাচেতনা।
এক কিলোমিটারের এই রাস্তাটি দিয়ে দৈনিক দুই গ্রামের হাজার লোকের উপজেলা সদরে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। এলাকার অধিকাংশ পরিবারই কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। চলতি বর্ষা মৌসুমে এলাকাবাসীর একমাত্র চলাচলের এই রাস্তাটি কাদায় পরিপূর্ণ হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে ওই রাস্তায় দেখা যায়, এক সপ্তাহ ধরে অবিরাম বৃষ্টির কারণে হেলেঞ্চা ও সাহেবপুরের কাঁচা রাস্তা বেহাল অবস্থায়। প্রতি বছরের মতো এবারও বৃষ্টিতে হাঁটুকাদায় পরিণত হয়েছে, যা একদমই চলাচলের অনুপযোগী।এ সময়ে কথা হয় সুমতি বালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রাবণী দাস ও হেলেঞ্চা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিজামুল হকের সঙ্গে। তারা উভয়েই বলেন, বর্ষা মৌসুমে এই রাস্তাটির কারণে ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
এই দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে, জরুরি প্রয়োজনে তাকে স্থানান্তর করতে হলে কোলে তুলে বা টিনে শুইয়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে নিয়ে যেতে হয় উপজেলা সদরের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এ ছাড়াও সাধারণ মানুষ ও স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের বাকেরগঞ্জে সদরে যাতায়াতে পড়তে হয় দুর্ভোগে।
হেলেঞ্চা গ্রামের,পাটিকর পাড়ার ব্যবসায়ী দীলিপ কুমার জানান রাস্তাটির জন্য পন্য পরিবহনে নানাভাবে ঝামেলায় পড়তে হয়,যাতায়াত ভারা বেশি হয়। যার প্রভাব বিক্রেতা ও ক্রেতার ওপর পড়ে। একই গ্রামের পিন্টু দে জানান, দুই গ্রামের অতি জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি অলৌকিক কোনো কারণে কি এটি পাকা হচ্ছে না তা বুঝে উঠতে পারছি না।
সাহেবপুর গ্রামের মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা অবহেলায় আছি। এলাকার রাস্তাঘাট সংস্কার না হওয়ায় বর্ষাকালে হাঁটুকাদায় চলতে হয়। সরকার গ্রামকে শহরে রূপান্তরিত করার কথা ঘোষণা করলেও তারপরেও হেলেঞ্চা ও সাহেবপুর গ্রামীণ সড়কের অবস্থা বেহাল। জরুরি ভিত্তিতে রাস্তাটি পাকাকরণ করা উচিত।
স্থানীয়রা বলেন, হেলেঞ্চা ও সাহেবপুর কাঁচা সড়কটির বেহাল দশা। পাকাকরণ না করায় সামান্য বৃষ্টিতেই চলাচল করা যায় না। এতে এলাকার মানুষ পড়েছে সীমাহীন দুর্ভোগে। তবে স্থানীয়দের দাবি তাদের রাস্তাটি অতি দ্রুত পাকাকরণের। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী খায়ের মিয়া বলেন, গ্রামীণ সড়কগুলো বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে পাকাকরণের কাজের বরাদ্দ প্রক্রিয়াধীন থাকে। নতুন বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।