দশমিনা
শীতে কাঁপে, বর্ষায় ভাসে দশমিনার আশ্রয়ণবাসীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ ২০ বছর আগে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার আরজবেগী আশ্রয়ণ প্রকল্পে ও পূর্ব আলীপুরা আবাসন প্রকল্পে ঘর পেয়েছিল ৩২০টি পরিবার। কথা ছিলো তাদের স্বাবলম্বী করতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার। কিন্তু তা আজো আলোর মুখ দেখেনি। অপরদিকে, দীর্ঘদিন ঘরগুলো সংস্কার না করায় ঝুরঝুরে হয়ে গেছে টিনের চাল, দরজা, জানালা। ফলে কি শীত কি বর্ষা – সব ঋতুতেই কষ্ট করছেন আশ্রায়ণ ও আবাসনের ঘরে বসবাসকারীরা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পদুটি ঘুরে দেখা গেছে, একটু বর্ষা হলেই অনেক ঘরের ভেতর পানি পড়ে মেঝে ভেসে যায়। শীতের কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়া ঢুকে যায় ভাঙা টিনের চাল আর জানালার ফাঁক দিয়ে।
আরজবেগী আশ্রয়ণ প্রকল্পের সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজির হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, মহাসেন ও ফণিসহ প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগে আমাদের লড়াই করতে হয়।
আরজবেগী আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মো: ফারুক বলেন, এখানে ৪০টি পরিবার বসবাস করি। মাত্র দুটি টিউবয়েলে কাজ করি। এখানে প্রতি বছর শিশু ও বৃদ্ধরা পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।
পূর্ব আলীপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিনমজুর বাবুল হোসেন মৃধা বলেন, ঘরগুলো মেরামতের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করা হলেও মেরামতে এগিয়ে আসেনি।
জানা গেছে, দশমিনা উপজেলায় আরো কয়েকটি আশ্রয়ণ প্রকল্প আছে। তবে সেগুলোতে থাকা পরিবারগুলোও বেহাল।
এ বিষয়ে দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইকবাল মাহামুদ লিটন বলেন, আরজবেগী আশ্রয়ণের লোকজন বিশুদ্ধ পানির অভাবে বিভিন্ন সময় পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এখানে ঘরের ভাঙ্গা টিনের চালাগুলো পরিবর্তন হওয়া দরকার। আমি উপজেলা মাসিক মিটিংয়ে এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। উপজেলা প্রশাসন কিছু দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধানে ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বাস পেয়েছি।
এ বিষয়ে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: অতিকুর রহমান সাগর বলেন, আশ্রয়ণের ঘরগুলো সংস্কারসহ তাদের শীতবস্ত্রের জন্য আমি উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: রবিউল হোসেন বলেন, বর্তমানে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না থাকায় আশ্রয়ণের ঘর এ মুহূর্তে মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। নতুন বরাদ্দ পেলেই ঘরগুলোতে কাজ শুরু করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল কাইয়ুম বলেন, আশ্রয়ণ ও আবাসন প্রকল্পের ঘরগুলোর প্রায় অর্ধেক পরিবার অনত্র চলে গেছে।
বর্তমানে যে পরিবারগুলো বসবাস করছে তাদের ঘরের ছবিসহ সকল তথ্যাদি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশ্রয়ণের ঘরগুলো সেমিপাকা করে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।