বরিশাল
সিন্টিকেটের তেলেসমতিতে বরিশালে আলু-মাংসের বাজরেও অস্তিরতা
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ বরিশালের বাজারে নতুন করে বেড়েছে আলু, মাংস ও সোনালি মুরগির দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে আলুর দাম বেড়েছে ২-৩ টাকা, গরু ও খাসির মাংসে বেড়েছে ২০-৫০ টাকা আর সোনালি মুরগিতে বেড়েছে ১০ টাকা। বাজারে মাছ ও সবজিসহ বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্য অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়া খুচরা বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট এখনো কাটেনি।
শনিবার (১২ মার্চ) সকালে নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমনটি জানা যায়। বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ কমেছে। যেসব সবজি পাওয়া যাচ্ছে দাম আগের মতোই চড়া।
প্রতি কেজি ফুল কপি ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, শালগম ৪০ টাকা, চিচিঙা ৫০ টাকা, ঝিঙে ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, চাল কুমড়া ৩০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, ধনেপাতা ১০০ টাকা ও কাঁচামরিচ ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
আলুর দাম কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৭-১৮ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ ৫০, ভারতীয় পেঁয়াজ ৪০-৪৫ টাকা, দেশি আদা ৮০ টাকা, চায়না আদা ১০০ টাকা, দেশি রসুন ৬০ টাকা, চায়না রসুন ১২০ টাকা, ছোট দানার মসুর ডাল ১২০ টাকা, বড় দানার মসুর ডাল ৯৫-১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
খোলা চিনি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, প্যাকেট চিনি ৮৫ টাকা, প্যাকেট আটা ৪৫ টাকা এবং প্যাকেট ময়দা ৫৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। খোলা সয়াবিন প্রতি কেজি ১৭০-১৭৫ টাকা এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেলের প্রতি লিটার ১৬৫-১৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে সরু, মোটা ও মাঝারিসহ প্রায় সব ধরনের চালের দামে কোনো পরিবর্তন হয়নি। সরু মিনিকেট চাল মানভেদে ৬২-৬৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বিআর-২৮ চাল ৫০-৫৫ টাকায় এবং নাজিরশাইল ৭০-৭৮টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে বাজারে সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। সোনালি মুরগি ২৭০ থেকে বেড়ে ২৮০ টাকা, ব্রয়লার ১৬০ টাকা এবং কক ২৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের ডিমের দাম প্রতি হালি ৩৬ থেকে ৩৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬২০ ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকায়।
বাজারে মাছের সরবরাহ কিছুটা কম। এ কারণে দামও চড়া। আকারভেদে চাষের শিং মাছ প্রতি কেজি ৬০০-৬৫০ টাকা, রুই ৩০০-৩৫০ টাকা, চাষের পাঙ্গাশ ১৮০-২০০ টাকা, কাতল ৪০০-৬০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৫০ টাকা, আকারভেদে আইড় ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা, দেশি শিং ৯৫০-১০০০ টাকা, দেশি চিংড়ি (ছোট) ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর পুরান বাজারে কেনাকাটা করতে আসা নাসির উদ্দিন বলেন, সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার পর এবার আলু ও মাংসের দামও বেড়েছে। এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্য সব পণ্যের দামও আকাশছোঁয়া। বেতন যা পাই তা দিয়ে আর চলা যাচ্ছে না। প্রতি মাসেই ধার দেনা করে চলতে হচ্ছে।
বরিশাল নগরীর বাজার রোডের পুরান বাজারের মাংস ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম বলেন, গরুর দাম বেড়েছে। হাটে ও খামারে আগে যে গরু বিক্রি হয়েছে ৫০ হাজার টাকায়, এখন তা ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। তাই গরুর মাংসে কেজি প্রতি ২০ টাকা বেড়েছে।
পুরান বাজারের মুদি দোকানি নিউ আজাদ স্টোরের মালিক সৈয়দ আজাদ আহম্মেদ বলেন, খুচরা দোকানিরা এখনো চাহিদা মতো সয়াবিন তেল পাচ্ছেন না। অর্থাৎ তেল কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা চাহিদা মতো তেল সরবরাহ করছেন না। তারা বলছেন কোম্পানি থেকে ডিলারদের তেল কম পাঠানো হচ্ছে। আর পাইকারি পর্যায়ে আলুর দাম বেড়েছে, তাই খুচরা বাজারে এর কিছুটা প্রভাব পড়েছে।