বরিশাল
শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্ব-সশরীরে থাকবে কম সময়ের জন্য ॥
এইচ এম সোহেল, নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে ছুটি চলছে। প্রায় দেড় বছর পর আগামী রোববার থেকে প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সশরীর ক্লাস শুরু হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত হয় ৫ সেপ্টেম্বর। যদিও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা না পাওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সময়সূচি নির্ধারণসহ অন্যান্য কাজ করতে পারছিল না। এ অবস্থায় ৮ সেপ্টেম্বর মাউশি ১১ দফা নির্দেশনা দেয়।
নির্দেশনায় বলা হয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর প্রতিদিন নির্দিষ্ট শ্রেণিতে দুটি করে ক্লাস হবে। ফলে শিক্ষার্থীদের আগের মতো দীর্ঘ সময় স্কুলে থাকতে হবে না। করোনাকালের আগে মাধ্যমিক পর্যায়ে একজন শিক্ষার্থীকে ছয় ঘণ্টার মতো স্কুলে থাকতে হতো। সরকারের কোভিড-১৯ (করোনা ভাইরাস) মোকাবিলা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি পরামর্শ দিয়েছিল যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিকে শিক্ষার্থীদের কম সময় স্কুলে রাখতে হবে, যাতে স্কুলে খেতে না হয়, মাস্ক খোলার প্রয়োজন না হয়। নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ২০২১ ও ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাবে। আর প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে এক দিন ক্লাসে যেতে হবে। সময়সূচির সঙ্গে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ব্যবহারিক ক্লাসগুলোও নির্ধারণ করা যেতে পারে। সময়সূচি প্রণয়নের ক্ষেত্রে মাউশি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ, প্রস্থান বা অবস্থানের সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে বলেছে। তারা বলছে, সময়সূচি এমনভাবে প্রস্তুত করতে হবে, যেন বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে ও বের হয়। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আপাতত প্রাতঃসমাবেশ (অ্যাসেম্বলি) বন্ধ থাকবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ক্লাসের সময়সূচি প্রণয়নের ক্ষেত্রে এসব বিষয় মেনে চলতে হবে।
বরিশাল জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেশ জনপদকে বলেন, তাঁরা মাউশির নির্দেশনার আলোকে সময়সূচি প্রণয়নের কাজ করছেন। এ নিয়ে তাঁরা গতকাল বৈঠকও করেছেন। শিগগির তা চুরানÍ করা হবে।তিনি আরো বলেন, কোভিড-১৯ এর পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করে প্রতষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজও শুরু করা হয়েছে। খোলার পর শর্ত ঠিক মতো পালিত হচ্ছে কিনা বা স্কুল খোলার পর করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি কেমন হয় তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবো।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মাধ্যমিক উইং এর পরিচালক মোঃ বেলাল হোসাইন বলেছেন, আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবো এবং প্রতিটি স্কুলের ওপর প্রতি সপ্তাহে রিপোর্ট দেয়া হবে। যেখানে পর্যাপ্ত শ্রেণি কক্ষ নেই সেখানে বিকল্প দিনে ক্লাস হবে।
২০২০ এর মার্চ থেকে বন্ধ থাকার দেড় বছর পরে শ্রেণিকক্ষের ক্লাসে ফিরছে শিক্ষার্থীরা। অনেকের মধ্যে করোনা নিয়ে আতঙ্ক রয়েছে। অনেকের মধ্যে ক্লাসে ফেরা নিয়ে সংকোচ তৈরি হতে পারে। শিক্ষাবিদেরা বলছেন, শিশুদের আগে নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। এখনো সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না এলেও ব্যাপক টিকাদান কর্মসূচির পাশাপাশি সংক্রমণের হার কমে আসায় খুব দ্রুত সব কিছু স্বাভাবিক হলেই আবার আগের নিয়মে চলবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো।