দশমিনা
যন্ত্রের মাধ্যমে বোরো ধানের ‘সমলয়’ চাষাবাদ শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ ফলন বাড়াতে পটুয়াখালীর দশমিনায় সমলয় পদ্ধতিতে যন্ত্রের মাধ্যমে জমিতে বোরো ধান রোপন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় উপজেলার বাশঁবাড়ীয়া ইউনিয়নের গছানী গ্রামের গছানী ব্লকে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন পটুয়াখালী খামারবাড়ির জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রশিক্ষণ অফিসার খাইরুল ইসলাম মল্লিক।
দশমিনা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে কমছে কৃষি জমি। তাই স্বল্প জমিতে অধিক ধান উৎপাদন করে মানুষের খাদ্যের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে সমলয় পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষাবাদ শুরু হয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে সমলয় পদ্ধতিতে ৫০ একর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হচ্ছে। রোপন পদ্ধতি দেখে কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।
খাইরুল ইসলাম মল্লিক জানান, সরকারি কৃষি প্রণোদনা কার্যক্রমের আওতায় গছানী ব্লকের স্থানীয় ৫০ জন কৃষক মাটিভর্তি ট্রেতে বপন করছে ধানবীজ। সমলয় চাষাবাদের নতুন মাত্রায় মেশিন দিয়ে ৫০ একর জমিতে রোবো ধানের চারা রোপন করা হয়।
কৃষির সর্বাধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে উচ্চ ফলনশীল একই জাত ব্যবহার, ট্রেতে বীজ বপন, কম বয়সের চারা রোপন, চারা রোপনে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার ব্যবহার, সুষম সার ব্যবহার, আইল ফসল, ধান কর্তনে কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহার করে উৎপাদন বাড়ানো, উৎপাদন খরচ সাশ্রয় করা, কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে ভরা মৌসুমে কৃষি শ্রমিকের সংকটের সমাধান সম্ভব হবে এই সমলয় চাষাবাদে। এ বিষয়ে কৃষকদের কারিগরি সুবিধা ও সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন তারা।
উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের গছানী গ্রামে ৪৫ জন কৃষক একসাথে ৫০ একর জমিতে বোরো ধান রোপন করেছে। এতে বীজ বপন হয় ট্রের মাধ্যমে ২২-২৪ দিনের চারাগুলো রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিন দিয়ে রোপন করা হয়। রোপনের সময় এলাকার কৃষকদের মাঝে কৌতূহল দেখা যায়।
এ বিষয়ে গছানী ব্লকের প্রধান কৃষক নেছার বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ৪৫ জন কৃষক সংঘবদ্ধ হয়ে সমালয় পদ্ধতিতে রোরো ধান আবাদের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে এ বছর এই প্রথম প্রযুক্তির মাধ্যমে আবাদের জন্য ৫০ একর জমি প্রস্তুত করেছি। আমাদের উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করছেন।
গছানী গ্রামের কৃষক হানিফ বলেন, একসাথে ৪৫ জন কৃষক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সমলয় পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষের জন্য ৫০ একর জমি প্রস্তুত করে আজ মেশিন দিয়ে রোপন শুরু করেছি।
একই গ্রামের আরেক কৃষক জাকির হোসেন জানান, মেশিন দিয়ে জমি ধান রোপন করতে অনেক সাশ্রয় আর সময়ও কম লাগে। এ রকম মেশিনে কৃষিকাজ আরো সহজ ও লাভজনক।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাফর আহমেদ জানান, সরকারের বিভিন্ন প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় উপজেলার গছানী ব্লকে সমলয় পদ্ধতিতে ৫০ একর জমিতে বোরো ধান রোপন করা হয়েছে। সার ও কীটনাশক প্রদানসহ ধান কাটার কাজ সরকারি উদ্যোগে করা হবে।