জাতীয়
বিনিয়োগের লোভ দেখিয়ে ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, গ্রেফতার ৩
সিআরওয়াই-পিটিওবিডি.সিসি ইনভেস্টমেন্ট ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রায় ১০০ কোটি টাকার প্রতারক চক্রের বাংলাদেশি তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টার।
বৃহস্পতিবার পঞ্চগড় সদর ও পাশের উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ছয়টি মোবাইল ফোন, ১০টি সিম উদ্ধার করা হয়। সিমের মধ্যে বিভিন্ন দোকানের নামে চারটি বিকাশ এজেন্ট সিম রয়েছে।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলো মোসাদ্দেকুর রহমান ওরুফে নীড় (৩০), মো. আনোয়ার হোসেন (৩৮) ও শাহিন ইসলাম (৩১)।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সিআইডি সদর দফতর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাইবার পুলিশ সেন্টারের কাছে একটি অভিযোগ আসে একটি প্রতারক চক্র ভুক্তভোগীর নম্বরে অপরিচিত নম্বর থেকে কল দিয়ে অনলাইনে কাজের প্রস্তাব দেয়। ভুক্তভোগী রাজি হলে প্রতারক চক্র তার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করে। পরে তাকে প্রাথমিক কাজ দেয় যে ইউটিউবে সাবসক্রিপশন করতে হবে। প্রতি সাবক্রিপশনের জন্য ১০০ টাকা করে প্রস্তাব দেয়।
এভাবে প্রথম দুই দিন ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা করে দিয়ে ভুক্তভোগীকে উৎসাহী করে তোলে প্রতারক চক্র। এর মধ্যে তারা ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন গ্রুপে যুক্ত করে নেয়, যেখানে আগে থেকেই আরও ভুক্তভোগী যুক্ত ছিল। এ ছাড়া তাদের নিয়ন্ত্রিত ওয়েবসাইট https://www.cry-ptobdf.cc তে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে নেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রতারক চক্রের কাছে বিকাশ ও ব্যাংকে টাকা জমা দিলে তারা সেই টাকা ভুক্তভোগীর আইড অ্যাকাউন্টে জমা দেখাতো। এভাবে ইউটিউব সাবক্রিপশনের নামে প্রতারক চক্র বিনিয়োগের কথা ভুক্তভোগীর শেয়ার করে। যেখানে তাদের বিভিন্ন পরিকল্পনার বর্ণনা দেওয়া হয়, যেমন ৫০০০ টাকা বিনিয়োগ করলে ৭০০০ টাকা, ১০০০০ হাজার দিলে ১৪০০০ টাকা পাওয়া যাবে। এভাবে তাদের বড় বড় বিনিয়োগের পরিকল্পনা ১, ২, ৩ ও ৪ ইত্যাদি থাকে।
ভুক্তভোগী যখন তাদের লোভনীয় প্রস্তাবের ফাঁদে পা দিয়ে বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করে, তখনই প্রতারক চক্র টাকাগুলো আটকে দেয়। তখন তারা বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে, যেমন আপনি ভুল এমাউন্ট বিনিয়োগ করেছেন, পুনরায় বিনিয়োগ করেন, আপনার টাকা ফ্রিজ হয়ে গেছে, আপনার আগের টাকা বের করতে হলে আবার ডিপোজিট করুন। এভাবে অভিযোগকারীর কাছ থেকে প্রায় ১০ লাখ ২৯ হাজার ৫৪২ টাকা হাতিয়ে নেয় এই প্রতারক চক্র।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অনেকে তাদের মাধ্যমে প্রতারিত হয়েছে জানিয়ে সিআইডি জানায়, এসব অভিযোগের ভিত্তিতে সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট শাখা প্রাথমিক অনুসন্ধান করে ঘটনার সত্যতা পায় এবং চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে।