আমতলি
বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরগুনার আমতলীতে এ বছর আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। পাকা ধানে মাঠের পর মাঠ হলুদের সমারোহ। বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। বেশ লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, এ বছর আমতলীতে আউশ চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ১১ হাজার ৫ হেক্টর। ওই লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর আমতলীতে ধাউশ ধানের আবাদ বেশী। আউশ ধান চাষের উপযুক্ত সময় বৈশাখ মাস থেকে শুরু করে জৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। বীজতলা থেকে শুরু করে পাঁচ মাসের মধ্যে উচ্চ ফলনশীল আউশ ধানের ফলন আসে। উচ্চ ফলনশীল জাতের বিরি-৪৮, চায়না ও গোড়াইল্লা ইরি ধান চাষ করছেন কৃষকরা। বর্তমানে ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কৃষকরা বলেন, এক একর জমিতে উৎপাদন খরচ ৩০-৩৫ হাজার টাকা। ওই জমিতে ৫০-৬০ মণ ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। বাজারে প্রতিমণ ধান ৯০০-১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ওই হিসেবে এক একর জমিতে আয় হবে ৪৫-৬০ হাজার টাকা। এ দিকে বাজারে ধানের দাম ভালো। শুরুতেই বাজারে প্রতিমণ ধান ৯৫০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে বাজারে ধানের দাম কিছুটা কম। সাড়ে ৪৬ কেজি মণের চায়না ধান ৯৫০ টাকা, বিরি-৪৮ ধান ৯৫০ টাকা এবং গোডাইল্লা ইরি ধান ৯৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় কৃষকরা এ বছর ভালো লাভবান হবে বলে জানান কৃষকরা।
সোমবার উপজেলার কুকুয়া, হলদিয়া, চাওড়া, আমতলী সদর, গুলিশাখালী ও আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন ঘুরে দেখাগেছে, পাকা ধানে মাঠের পর মাঠ হলুদের সমারোহ। কৃষকরা ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের সোহেল রানা বলেন, দুই একর জমিতে আউশ ধানের চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে সাড়ে ৪৬ কেজির প্রতিমণ ধান ৯৫০ থেকে ৯৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, দু’এক দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু করবো।
কুকুয়া গ্রামের কৃষক জালাল উদ্দিন বলেন, দুই একর জমিতে আউশ ধান চাষ করেছি। ফলন বেশ ভালোই হয়েছে। বাজারে দামও ভালো। আশা করি বেশ লাভবান হবো।
কুকুয়া ইউনিয়নের কেওয়াবুনিয়া গ্রামের ছালাম মাদবর বলেন, এক একর জমিতে আউশ ধান চাষ করেছি। ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে এবং বাজারে ধানের দামও ভালো। আশা করি ভালো লাভবান হবো।
একই গ্রামের শফিক উদ্দিন বলেন, বাজারে দাম ভালো থাকায় খরচ পুসিয়ে আশাকরি ভালো লাভবান হবো।
ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম ও মোঃ ফয়সাল মৃধা বলেন, তিন জাতের ধান বাজারে বিক্রি হচ্ছে। চায়না ধান প্রতিমণ ৯৫০ টাকা, বিরি-৪৮ ধান ৯৫০ টাকা এবং গোডাইল্লা ইরি ৯৭০ টাকার বিক্রি হচ্ছে।
আমতলী উপজেলা আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেন বলেন, বাজারে বিআর-৪৮, চায়না ও গোডাইল্লা ইরি ধান বিক্রি হচ্ছে। শুরু থেকেই বাজারে ধানের দাম ভালো।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, এ বছর আউশ ধান চাষের লক্ষমাত্রা ছিল ১১ হাজার ৫ হেক্টর। ওই লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়েছে। ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় আগামীতে চাষে আরও উৎসাহিত হবে কৃষকরা। তিনি আরো বলেন, বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় কৃষকরা বেশ লাভবান হবে।