বরগুনা
ডুবে যাওয়া ট্রলারের ৯ জেলের সন্ধান মেলেনি ১৯ দিনেও
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যাওয়া ট্রলারের নয় জেলের সন্ধান মেলেনি ১৯ দিনেও। কোনো জনপ্রতিনিধি ও সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা তাদের পরিবারের খোঁজ নেননি।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে বছরের পর বছর জেলেরা নিখোঁজ থাকলেও তাদের নাম আসে না মৃতদের তালিকায়। যে কারণে তাদের স্বজনরা পান না সরকারের সহায়তা।
ঝড়ের কবলে ভেসে যাওয়া ৯০ জেলে ভারতের বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আটকে থাকলেও বাংলাদেশের হাইকমিশনের সহযোগিতার অভাবে ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির নেতারা।
গত ১৫ আগস্ট পাথরঘাটার বিএফডিসির খাল থেকে এফবি সিরাজ উদ্দিন ট্রলার নিয়ে ১১ জেলে ইলিশ শিকারে যান গভীর সমুদ্রে। ১৮ আগস্ট নিম্নচাপের ফলে সৃষ্ট ঝড়ে ডুবে যায় ট্রলারটি। উত্তাল সমুদ্রের ভাসতে ভাসতে ভারতের কোস্টগার্ডের সহযোগিতায় পাঁচ জেলে ফিরে এলেও ১৯ দিনেও ফিরে আসেননি বাকি ছয় জেলে। ফিরে আসা আলম মিয়ার বর্ণনায় উঠে এসেছে বাবা-ছেলের বেঁচে ফেরার ভয়ঙ্কর স্মৃতি।
নিখোঁজ ইব্রাহিমের ট্রলারের মাঝি আলম মিয়া বলেন, পাথরঘাটার কালমেঘা ইউনিয়নের লাকুরতলা গ্রামের নিখোঁজ জেলে ইব্রাহিমের কলেজ পড়ুয়া ছেলে মাসুম বিল্লাহ বাবা ফিরে আসার অনিশ্চয়তায় নিজের লেখাপড়া ও সংসার চালানো নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে ইব্রাহিমের স্ত্রী ও বৃদ্ধ মা-বাবার আহাজারি যেন থামছে না। তাদের অভিযোগ, এখনো কেউ খোঁজ নেননি তাদের।
ওই ট্রলারের ছয় জেলেসহ বিভিন্ন ট্রলারের মোট নয় জেলের সন্ধান মিলছে না। দরিদ্র জেলে পরিবারগুলোতে চার/পাঁচজন করে সদস্য রয়েছেন। তারা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন, চাচ্ছেন সরকারের সহযোগিতা।
ঝড়ের কবলে সমুদ্রে ভেসে ভারতে চলে যাওয়া জেলেদের উদ্ধারে সম্প্রতি ভারতে গিয়েছিলেন বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী।
তিনি বলেন, ভারতে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা জেলেদের মধ্যে পাওয়া যায়নি নিখোঁজ ওই নয় জেলেকে। এমনকি বছরের পর বছর নিখোঁজ থাকলেও মৃতদের তালিকায় নাম না আসায় স্বজনরা বঞ্চিত হচ্ছেন সরকারি সহায়তা থেকে। বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহযোগিতা না পাওয়ার কারণে আটকে পড়া জেলেদের দেশে ফিরিয়ে আনা বিলম্বিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, সঠিক তথ্য পেলে মন্ত্রণালয় জানানো হবে। নিখোঁজ জেলেদের পরিবারকে উপজেলা চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া হবে।