ভোলা
গরুর খামারে বায়োগ্যাস উৎপাদন করে তাক লাগিয়েছেন সাত্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ শখের বসে গরুর খামার, সেখান থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদন করে তাক লাগিয়েছেন আবদুস সাত্তার নামে ভোলার এক খামারি। তার এ বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট দেখতে প্রতিদিনই বাড়িতে ভিড় করছে মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, ২০২১ সালের জুলাইয়ে ৮টি গরু দিয়ে বসতঘরের পাশে একটি খামার গড়ে তোলেন সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ছোট আলগী গ্রামের মুদি দোকানি আবদুস সাত্তার। তার খামারের গোবর এক স্থানে ফেললে ‘ভলান্টিয়ার বাংলাদেশ’ নামের স্থানীয় একটি সংগঠনের নজরে আসে। খামারি আবদুস সাত্তারকে গোবর দিয়ে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট তৈরির করার পরিকল্পনা দেন তারা। তাদের পরিকল্পনা ও সহযোগিতায় বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট তৈরি করেন তিনি।
আবদুস সাত্তার জানান, ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের লোকজন স্থান নির্ধারণ করে দেন। মাটি কেটে গভীর কাজটি তারাই করেন। এরপর রাজমিস্ত্রি নিয়ে ট্যাংকি তৈরি করি। সব মিলে আমার ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়। এর মধ্যে ৩২ হাজার টাকা ভলান্টিয়ার বাংলাদেশের ভোলা শাখা থেকে আমাকে দেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, প্লান্ট থেকে যে পরিমাণ গ্যাস উৎপাদন হয় তা দিয়ে ঘরের রান্নার কাজ সহজে হয়ে যায়। যাদের গরুর খামার রয়েছে তারা বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট তৈরি করে জ্বালানি খরচ বাঁচাতে পারেন।
আবদুস সাত্তারের স্ত্রী নাজমুল নাহার জানান, আগে লাকড়ি দিয়ে চুলায় রান্না করতাম। ধোঁয়ার কারণে কষ্টে হতো। কিন্তু এখন বায়োগ্যাস দিয়ে প্রতিদিন খুব সহজে ঘরের রান্না করতে পারি। এটা আমার জন্য অনেক সুফল এনে দিয়েছে।
একই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মতিন জানান, লোকমুখে শুনেছি আবদুস সাত্তার গরুর গোবর দিয়ে গ্যাস উৎপাদন করছেন। সে গ্যাস দিয়ে নাকি ঘরের রান্না করে। সেটা শুনে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা দেখতে এসেছি। কোনো টাকা ছাড়াই প্রতিদিন গ্যাস দিয়ে ঘরের রান্না করা যায়।
একই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আলমগীর হোসেন জানান, সাত্তার ভাইর বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট দেখে খুবই ভালো লেগেছে। আমারও একটি গরুর খামার আছে। আমিও বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট তৈরি করবো।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ভলান্টিয়ার বাংলাদেশের ভোলা শাখার সভাপতি মো. মনিরুল ইসলাম জানান, আমরা আবদুস সাত্তারকে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট তৈরি করতে উদ্বুদ্ধ করেছি। তাকে প্ল্যান্ট করার জন্য ৩২ হাজার টাকাও দিয়েছি।
এ বিষয়ে ভোলা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, ছোট-বড় খামারিরা বায়োগ্যাস উৎপাদন করলে জ্বালানিতে বেশি অর্থের খরচ হবে না। এ ধরনের প্ল্যান্ট তৈরিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে।