সারাদেশ
১ আনা স্বর্ণের লোভে শিশুকে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে সাড়ে সাত হাজার টাকা মূল্যের একআনা স্বর্ণের রিংয়ের লোভে পড়ে তাহমিনা আক্তার সাদিয়া (৮) নামে এক শিশুকে অপহরণের পর হত্যাচেষ্টা অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার ফলকন এলাকা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। মুহূর্তেই তার রক্তাক্ত ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় সাদিয়ার মা নার্গিস বেগম বাদী হয়ে রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে কমলনগর থানায় অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনাকারী আরজু আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে আরজুকে গ্রেপ্তার করে লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) হোসাইন মো. রায়হান কাজেমী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আরজু চরফলকন গ্রামের অজি উল্যাহর মেয়ে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ভুক্তভোগী শিশু সাদিয়া কমলনগর উপজেলার চরফলকন ইউনিয়নের চরফলকন গ্রামের মো. মোতাছিনের মেয়ে। স্বর্ণালংকারের লোভে মেয়ের বয়সী শিশু সাদিয়াকে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনাকারী আরজু শনিবার বিকেল ৩ টার দিকে খেলাধুলা করার কথা বলে তিনি সাদিয়াকে বসতঘর ঘর থেকে অপহরণ করেন। পরে জোরপূর্বক একআনা ওজনের স্বর্ণের কানের রিং শিশুটির কান থেকে খুলে নেন। এরপর চর লরেঞ্চ মদিনা স্বর্ণ শিল্পালয় নামের দোকানে রিংটি ৭ হাজার ৫৫০ টাকা বিক্রি করেন। ঘটনার পর শিশুটিকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরাফেরা শেষে রাত ৮ টার দিকে চরফলকন গ্রামে নিয়ে যান। ওই গ্রামের হাবিব উল্যাহ পাঞ্জাল বাড়ির সামনে রিকশা থেকে নেমে আরজু শিশুটিকে নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে হত্যার উদ্দেশ্যে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এরপর আরজু আত্মগোপনে চলে যান।
এদিকে রাতেই শিশুটিকে স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। শিশুটির মা নার্গিস বেগম বাদী হয়ে কমলনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কমলনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হিমেল চাকমা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী রিক্সাচালকের সহায়তায় আরজুকে গ্রেপ্তার করে। আরজুর তথ্য অনুযায়ী চরলরেন্স বাজারের মদিনা স্বর্ণ শিল্পালয় থেকে শিশুটির কানের রিং উদ্ধার করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) হোসাইন মো. রায়হান কাজেমী গণমাধ্যমকে বলেন, শিশুটির কানের রিং খুলে নেওয়ার ঘটনা প্রকাশ হওয়ার ভয়ে আরজু তাকে হত্যার চেষ্টা করে বলে তদন্তে জানা যায়। গ্রেপ্তার আরজুকে আদালতে সেপার্দ করা হয়। আদালত তাকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে।