বরিশাল
বিনামূল্যের ট্রান্সক্রিপ্ট নিতে ববি শিক্ষার্থীদের দিতে হচ্ছে টাকা!
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) ‘বিনামূল্যে’ ট্রান্সক্রিপ্ট প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হলেও বাস্তবে কৌশলে শিক্ষার্থীদের পকেট হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে ৮শ টাকা পর্যন্ত। ববি প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ট্রান্সক্রিপ্ট উত্তোলনে টাকা না নেওয়া হলেও গ্রেডশিট বাবদ এ টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। একই সঙ্গে ভোগান্তিও বেড়েছে বলে জানিয়েছে ভূক্তভোগীরা। তাই ভোগান্তি লাঘবে গ্রেডশিট ছাড়াই ট্রান্সক্রিপ্ট উত্তোলনের নিয়ম চালুর দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
বিভিন্ন তথ্য ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২৪ জুলাই অভ্যুত্থানের পর তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূইয়ার কাছে ২২ দফা দাবি পেশ করেন শিক্ষার্থীরা। সেই দাবির একটি অনুযাযী ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামের স্বাক্ষরে দেওয়া বিবৃতিতে ট্রান্সক্রিপ্ট উত্তোলন বিনামূল্য ঘোষণা দেওয়া হয়। এর কয়েক মাস পর বদরুজ্জামান ভূইয়া পদত্যাগ ঘটে। সেই সময়ে নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন।
একই বছরের ৩০ অক্টোবর তখনকার পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেনের স্বাক্ষরে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়- ‘ট্রান্সক্রিপ্ট উত্তোলনের ক্ষেত্রে স্নাতক/স্নাতকোত্তর শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হতে হবে এবং আবেদনপত্রের সাথে সকল সেমিস্টার/বর্ষের গ্রেডশিট (আপডেট ফলসহ) এর ফটোকপি সংযুক্ত করে আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।’ এই নোটিশের পর থেকে শিক্ষার্থীদের এখন ট্রানস্ক্রিপ্ট তোলার জন্য বিগত সকল সেমিস্টার/বর্ষের গ্রেডশিট উত্তালন করতে হচ্ছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিচ্ছে চার ইয়ারে ৪শ ও আট সেমিস্টারে ৮শ টাকা করে। অতীতে ট্রানস্ক্রিপ্ট তোলার জন্য কোন প্রকার নথি সংযুক্তির প্রয়োজন ছিল না। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইয়ার ও সেমিস্টার হিসাবে পরীক্ষা গ্রহণ করে থাকে বিভাগগুলো।
বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শহিদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে আমরা যে পদ্ধতিতে ট্রানস্ক্রিপ্ট উত্তালন করছি সেটা আমাদের জন্য খুবই হয়রানি মূলক এবং ব্যয়বহুল । কারণ গ্রেডশিট তোলার জন্য আমাদের প্রায় ৪০০-৮০০ টাকা ব্যয় হচ্ছে, একই সাথে সময় সাপেক্ষ। আমরা চায় অবিলম্বে এই পদ্ধতি বাতিল করে আগের মত কোন গ্রেডশিটের ফটোকপি ছাড়াই আমরা যেন ট্রানস্ক্রিপ্ট তুলতে পারি।
এ বিষয়ে আইন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সিরাজুল ইসলাম বলেন,আমরা দাবি করেছিলাম ট্রানস্ক্রিপ্ট উত্তালনের ফি মওকুফ করা এবং ট্রানস্ক্রিপ্ট উত্তালনের পদ্ধতি সহজ করতে হবে। কিন্তু পরর্বর্তীতে এই প্রক্রিয়াতে জটিল করে গ্রেড সিটের নামে আরও বাড়তি টাকা আদায় করা হচ্ছে যা শিক্ষার্থীদের জন্য হয়রানিমূলক।
ববির পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক সুব্রত কুমার বাহাদুর বলেন, শিক্ষার্থীদের সমস্যা হবে এমন কোন কাজ আমরা করতে চাই না। শিক্ষার্থীরা যদি এই বিষয় নিয়ে একটা আবেদনপত্র জমা দেয় তবে আমি পরবর্তী একাডেমিক সভায় এই বিষয় নিয়ে কথা বলবো এবং যত দ্রুত সম্ভাব সমাধান করার চেষ্টা করবো। সর্বশেষ আমরা সব সময় শিক্ষার্থীদের কল্যাণে স্বার্থে কাজ করতে চাই।
ববি উপাচার্য অধ্যাপক ড. তৌফিক আলম বলেন, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে শিক্ষার্থী বান্ধব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।