বরিশাল
মহাসড়কের ফুটপাতজুড়ে ঝোপঝাড়, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল
ভ্রমণপিপাসু ও দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক। বরগুনার আমতলীতে এ সড়কে ফুটপাত থাকলেও তা ঢেকে গেছে আগাছায়। এতে পথচারীদের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। দ্রুত জঙ্গল ও আগাছা দূর করে মানুষের চলাচলের পথ সুগম করে দেওয়ার দাবি স্থানীয়দের।
জানা গেছে, ২০০৭ সালে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক নির্মাণ করে। গত ১৮ বছরে এ সড়কটি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হয়ে উঠেছে। সড়ক নির্মাণকালে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য সড়কের পাশে তিন ফুট করে ফুটপাত করে দেয়। ২০২২ সালে ২৫ জুন পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার পর এ সড়কটি আরও জনগুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কয়েক হাজার যানবাহন এ সড়ক দিয়ে চলাচল করছে। কিন্তু ফুটপাতে আগাছা জন্ম নিয়ে ঝোপঝাড়ে পরিণত হওয়ায় সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মহাসড়কের দুপাশে অবস্থিত ফুটপাতগুলো দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। আগাছা ও ঝোপঝাড়ে ঢেকে গেছে চলাচলের পথ। কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে, ছোট-বড় গাছগাছালি। বিশেষ করে আমতলী উপজেলার শাখারিয়া থেকে বান্দ্রা পর্যন্ত ৩৭ কিলোমিটার সড়কের ফুটপাতের পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। ফুটপাত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সংস্কার না করায় বনজঙ্গলে পরিণত হয়েছে। ফলে পথচারীদের মূল সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয়। এতে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়া বর্ষাকালে যানবাহন চলাচলেও সমস্যা হয়।
স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত জঙ্গল ও আগাছা পরিষ্কার করে ফুটপাত পুনরুদ্ধার না করলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এখনই নজর দেওয়া জরুরি।
স্থানীয় পথচারী নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তার পাশে হাঁটার কোনো উপায় নেই। বাধ্য হয়ে আমাদের মূল রাস্তায় নামতে হয়, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। দুর্ঘটনার আশঙ্কা সব সময়ই থাকে।’
আমতলী সরকারি কলেজের ছাত্রী তামান্না সুলতানা বলেন, ‘কলেজে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে হাঁটতে গেলে দুর্ঘটনার ভয় থাকে, পোশাক নষ্ট হয়। অনেক সময় সাপ কিংবা বিষাক্ত পোকামাকড়ের ভয়ও থাকে। তাই বাধ্য হয়ে মূল সড়ক দিয়ে হাঁটতে হয়।’
আমতলী বাজারের ব্যবসায়ী মিলন হোসেন বলেন, ‘জঙ্গল পরিষ্কার করে চলাচলের উপযোগী ফুটপাত ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
মোটরসাইকেলচালক শাহ আলম তালুকদার বলেন, সড়কের দুই পাশ ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে। গাড়ি চালাতে খুবই সমস্যা হয়।
বাসচালক সাদ্দাম মিয়া বলেন, ‘গাড়ি পাশাপাশি ক্রস করতে গেলে ফুটপাত হয়ে যেতে হয়। ওই সময় বন-জঙ্গলের কারণে ফুটপাত কি না বোঝা মুশকিল। ঝোপঝাড় পরিষ্কার থাকলে ঝুঁকি থাকে না।’
এ বিষয়ে বরগুনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কুমারেশ বিশ্বাস বলেন, ‘ফুটপাতের অবস্থা সম্পর্কে আমি অবগত। অল্প দিনের মধ্যেই সড়কের দুপাশের বন-জঙ্গল পরিষ্কার করে ফুটপাত সাধারণ মানুষের চলাচলের উপযুক্ত করে দেওয়া হবে।’