বরিশাল
বরিশালে দুই ভাতিজার হামলায় চাচা রক্তাক্ত জখম, ধান্দাবাজ চক্রের ফাঁদ!
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডস্থ মধ্য হবিনগর এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় একটি চক্র ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ মিলেছে।
সূত্রে জানা গেছে, মধ্য হবিনগর এলাকার স্থানীয় বজলু ফরাজির বৃদ্ধ মাতা আনোয়ারা বেগমকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মামুন ফরাজির স্ত্রী আকলিমা বেগমের সাথে ভাসুর বজলু ফরাজির বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। পরবর্তিতে আকলিমার পূত্র নাহিদ ও নাঈম খবর পেয়ে তাদের বড় চাচা বজলু ফরাজির কাছে এসে তার মায়ের সাথে বাকবিতন্ডার কৈফিয়ৎ চায়। এ সময় কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সহোদর নাহিদ ও নাঈম চাচা বজলু ফরাজিকে কিল ও ঘুষি মেরে নাক ফাটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন। তার চিৎকার শুনতে পেরে বজলু ফরাজির স্ত্রী মোর্শেদা বেগম স্বামীকে বাঁচাতে ছুটে আসলে তাকেও পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন নাহিদ ও নাঈম। পরে স্বজনরা বজলু ফরাজি ও তার স্ত্রী মোর্শেদাকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করেন। বজলু ফরাজি হাসপাতালের ৪র্থ তলায় পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। স্ত্রী মোর্শেদা বেগম শেবাচিমের ৪র্থ তলায় মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
এদিকে ভাসুরকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখমের ঘটনায় পূত্রদের মামলা মকোদ্দমা থেকে বাঁচাতে মা আকলিমা বেগম নিজের ছোট কন্যাকে (১০) বজলু কর্তৃক পিটিয়ে জখমের অভিযোগ তুলে গত ২১ মার্চ রাতে শেবাচিম হাসপাতালের ২য় তলায় শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। হাসপাতালে ২দিন অবস্থানের পর রোববার (২৩ মার্চ) ছাড়পত্র নিয়ে নিজ বাড়িতে চলে যান আকমিলা।
ভুক্তভোগী বজলু ফরাজি অভিযোগ করে বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছোট ভাইয়ের ২ ছেলে নাহিদ ও নাঈম আমাকে মেরে আহত করেছে, নাক ফাটিয়ে দিয়েছে আমার। উল্টো আমাকেই ফাঁসাতে মাহিকে পিটিয়ে জখমের অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তারা। ভাতিজা কতৃক পিটিয়ে জখমের ঘটনায় আমি কাউনিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। রোববার (২৩ মার্চ) কাউনিয়া থানার এসআই মোস্তাফিজ রহমান সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাচা-ভাতিজার মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে শায়েস্তাবাদের স্থানীয় বিএনপির কতিপয় ধান্দাবাজ নেতা-কর্মী মামুন ফরাজির স্ত্রী আকলিমা ও তার আত্নীয় স্বজনদের প্রলোভন দেখিয়ে আহত বজলু ফরাজি ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা দায়েরের জন্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। তদবির করছেন বিভিন্ন মহলে।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের দাবি- আহত বজলু ফরাজির ২ পূত্র প্রবাসী হওয়ায় তাকে মামলার জালে ফাঁসিয়ে শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির কতিপয় ধান্দাবাজ নেতা আর্থিক ফায়দা হাসিলের জন্য কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন।
চাচার উপর হামলায় অভিযুক্ত নাঈন জানান, ২১ মার্চ আমার বড়চাচা বজলু ফরাজি আমার মাকে ও বোনকে মেরেছে। পরে আমরাও তাকে মেরেছি। এ ঘটনায় চাচাও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আমার ছোট বোনকেও হাসপাতালে ভর্তি করেছি। দুই পক্ষ থেকেই কাউনিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে- দুই পক্ষের অভিযোগ সরেজমিন যাচাই বাছাইয়ের পর ঘটনার সত্যতা পেলে ওসি স্যার পরবর্তী পদক্ষেপ নিবেন।