পটুয়াখালী
পটুয়াখালীতে নির্মাণের একদিন পরেই ধসে পড়ল সড়ক
দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর শুরু হয় সড়ক বর্ধিতকরণের কাজ। তবে কাজ নিয়ে শুরু থেকেই অভিযোগ ছিল এলাকাবাসীর। তাদের অভিযোগ, রাস্তার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের উপকরণ। কাজ করা হচ্ছে না সিডিউল অনুযায়ী। তবে কোনো কিছুকে তোয়াক্কা না করে শেষ হয় সেই রাস্তার কাজ। কিন্তু কাজ শেষের একদিন বাদেই ধসে পড়ল সড়কটি।
ঘটনাটি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বগা আরএসডি-বাহেরচর জিসি সড়কের। গত রোববার সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। আর সোমবার সড়কটির একটি অংশের কিছু জায়গা ধসে পড়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলার বগা থেকে কাছিপাড়া সড়কটি প্রশ্বস্তকরণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। একাধিক প্যাকেজের মাধ্যমে দরপত্র প্রক্রিয়া শেষে সড়কটি ১০ ফুট থেকে ১৮ ফুট বর্ধিতকরণের কাজ শুরু হয়। নির্মাণকাজ শুরুর পর থেকে সিডিউল অনুযায়ী কাজ না করা ও নিম্মমানের উপকরণ ব্যবহার করাসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। কাজ শেষ হওয়ার একদিন পরেই সড়কটিতে ধস দেখা যায়।
মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহীদ জালাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার বর্ধিত অংশের একাধিক স্থান দেবে গেছে। আবার কোথাও ধসে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ফোরকান প্যাদা ও মোকছেদুল ইসলাম বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী, প্রকল্পের দুপাশে পাইলিংয়ের কাজ সড়ক নির্মাণের আগেই করতে হয়। কিন্তু, ঠিকাদার সড়কের সাববেইজ ও ম্যাকাডাম করার পর পাইলিং করেছেন। এরপর ইট ভাঙার ডাস্ট দিয়ে রোলার মেশিন ব্যবহার না করেই কার্পেটিং করেছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী কথা বলতে গেলেই ঠিকাদারের লোকজন তাদের হুমকি দিয়ে নিবৃত করেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কাজে ব্যাপক অনিয়ম হওয়ায় কার্পেটিং করার পরের দিনই একাধিক স্থানে ধসের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলেন, রোববার কার্পেটিং করা হয়, আর সোমবারই ধস দেখা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা কাজী নুরুল ইসলাম বলেন, ‘এভাবে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা মেনে নেওয়া যায় না। সিডিউল না মেনে নিম্মমানের উপকরণ দিয়ে নামমাত্র কাজ করা হয়েছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সড়কটির নির্মাণকাজে নিয়োজিত কয়েকজন শ্রমিক বলেন, ‘১০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের ছয় হাজার ৬৮৫ মিটার সড়কের নির্মাণ কাজ করছেন খায়রুল কবির রানা নামের একজন নির্মাতা। আমাদেরকে ঠিকাদার যেভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয় সেভাবেই কাজ করছি ‘
অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আবুল কালাম বলেন, ‘যে অংশ ধসে পড়েছে তা ঠিক করে দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে এলজিইডির বাউফল উপজেলার প্রকৌশলী শ্যামল কুমার গাইন বলেন, ‘কাজ করতে গেলে ভুল ত্রুটি হতেই পারে। এখন পর্যন্ত ঠিকাদারকে বিল পরিশোধ করা হয়নি। যেখানে সমস্যা তৈরি হয়েছে সেখানে ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ করানো হবে। তারপরই বিল দেওয়া হবে।