ভোলা
ভোলায় ৩৫ ঘণ্টা পর ধর্মঘট প্রত্যাহার, বাস চলাচল শুরু
ভোলায় প্রায় ৩৫ ঘণ্টা পর বাস–মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠকের পর বেলা দুইটার দিকে ধর্মঘট তুলে নেওয়া হয়। এরপর ভোলা–চরফ্যাশন মহাসড়কসহ পাঁচটি রুটে বাস চলাচল শুরু হয়েছে।
বাস–মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রশাসন আটটি সিদ্ধান্ত নেওয়ায় মানবিক বিবেচনায় তাঁরা বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন।
মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল বন্ধের দাবিতে গত রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে ভোলার পাঁচটি রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় বাস–মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন। এতে সমর্থন দেয় ভোলা বাস মালিক সমিতি। দাবি আদায়ে বাস শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এরপর তিন দফা দাবিতে গতকাল সোমবার সকাল থেকে ধর্মঘটের ডাক দেয় অটোরিকশা মালিক–শ্রমিক সমিতি। আজ বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হলেও অটোরিকশাচালকদের ধর্মঘট এখনো প্রত্যাহার করা হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল ১০টায় ভোলা বাস মালিক সমিতি, বাস–মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক সমিতি ও অটোরিকশা চালক সমিতির নেতাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে সমঝোতা বৈঠকে বসে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহানের সভাপতিত্বে সভায় পুলিশ সুপার মো. শরিফুল হক, ভোলা পৌরসভার প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাহাদাৎ মো. হাচনাইন পারভেজ, ভোলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম খান, অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি মো. জাকির হোসেন, বাস–মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. মিজানুর রহমানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বেলা একটা পর্যন্ত সভা চলে।
জেলা প্রশাসন সূত্র ও বাস মালিক সমিতির নেতারা জানান, কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর শ্রমিক ইউনিয়ন বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে। বৈঠকে আটটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভোলার মধ্যে থাকা মহাসড়কে (বরিশাল–ভোলা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের অংশ) তিন চাকার কোনো যান চলবে না, তবে আঞ্চলিক মহাসড়কে (ভোলা–চরফ্যাশন মহাসড়ক) চলবে। সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক পাশে (সামনে) কোনো যাত্রী নিতে পারবেন না। কেউ আইন নিজের হাতে নিয়ে কোনো কাজ করতে পারবেন না। নিবন্ধন পাওয়া ৪৪৯টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছাড়া কোনো অটোরিকশা সড়কে চলতে পারবে না। ফিটনেস ও রুট পারমিট ছাড়া কোনো বাস চলাচল করতে পারবে না। সনদে উল্লিখিত আসনের বাইরে বাসে যাত্রী নেওয়া যাবে না। ধর্মঘটের সময় আন্দোলনকারীরা যদি কোনো সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করেন, সিএনজি মালিক সমিতির নেতারা থানায় মামলার পর তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে বাস মালিক সমিতি ক্ষতিপূরণ দেবে।
জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান বলেন, জরুরি সভায় উভয় পক্ষের কথা শুনে আটটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর বাস ও সিএনজির মালিক–শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। তাঁরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন।
তবে সিএনজি অটোরিকশা মালিক–শ্রমিক সমিতির সভাপতি মো. জাকির হোসেন বলেন, গতকাল সকালে তাঁরা তিন দফা দাবিতে ধর্মঘট ডাকেন। কিন্তু তাঁদের দাবিগুলো না মেনে উল্টো আরও কিছু সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই এখনো তাঁরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেননি। ভোলায় তিন চাকার অটোরিকশার তিনটি সমিতি। তাদের সবাইকে ডাকা হয়েছে। সভা শেষে ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।