বাকেরগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি
বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ বাকেরগঞ্জের পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের নিউমার্কেট এলাকার মাসুদ মৃধার স্ব-মিলের পাশ থেকে গত রোববার রাত ৮ টায় অজ্ঞাত এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে পাঠিয়েছে। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের নিউমার্কেট এলাকার মাসুদ মৃধার স্ব-মিলের পাশে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। লাশটি দেখে চিনতে না পেরে পুলিশে খবর দিলে বাকেরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম, ওসি তদন্ত নকিব আকরাম, এসআই আবদুল্লাহ আল মামুন, এস.আই তরুন, এ.এস.আই সোহেল রানা ও এ.এস.আই সজল লাশটি উদ্ধার করেন। বৃদ্ধের গায়ে ফুল হাতা সাদা শার্ট ও পড়নে লুঙ্গি ছিল। বাকেরগঞ্জে দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে অজ্ঞাত লাশের মিছিল। আর খুনীরা জঘন্য অপরাধ করেও থেকে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাইরে। এ যেন বাকেরগঞ্জে খুনের মেলা বসেছে, খুনিরা বেছে নিচ্ছে খুন করার জন্য বাকেরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা। বাকেরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে একের পর এক অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার করা হয়, পরে লাশের পরিচয় মিলেছে। ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব, জমিজমা সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব, ব্যবসায়ীক বিরোধসহ বিভিন্ন দ্বন্দ্বের জের ধরে অপহরণের পর খুন করা হচ্ছে মানুষকে। এসব মানুষকে হত্যার পর ঘাতকরা লাশ ফেলার জন্য বেছে নিচ্ছে নির্জন স্থান। আর সেসব লাশে আঘাতের ধরন এবং ময়নাতদন্ত রিপোর্ট মিলিয়ে শতকরা ৮০ ভাগই হত্যাকান্ড বলে প্রতীয়মান হয়। উদ্বেগজনক এ পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর মতে, পুলিশের যথাযথ পদক্ষেপ না থাকার কারণে একের পর এক হত্যাকান্ড ঘটছে। বাস্তব পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বিভিন্ন হত্যাকান্ড হয়ে থাকে। কিন্তু থানা পুলিশের কাজ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা। অনেক সময় জায়গা জমি বিরোধের অভিযোগ থানায় দিলেও আইনি জটিলতার কারনে সুষ্ঠু সমাধান দেয়া যায় না। অনেকের কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকলেও জমি দখল করতে গেলে হামলার শিকার হয়। আর সেই হামলার মাধ্যমে হচ্ছে হত্যাকান্ড। জমির সঠিক কাগজপত্র বিবেচনা করে পুলিশ যদি জায়গা দখল করতে সহযোগিতা করে তাহলে হবে না, এসব অপ্রীতিকর হত্যাকাণ্ড। এটাই ধারণা সচেতন মহলের। কিন্তু এভাবেই বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় বিভিন্ন সময়ে লাশ মিলছে খালে, বিলে, নদী, মহাসড়কের পাশে। উল্লেখ্য গত সপ্তাহ খানেক আগেও পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার পিতা-পুত্র মাছ ধরার চাই বিক্রি করতে এসে বাকেরগঞ্জে খুন হয়। আইনি প্রক্রিয়ায় সাধারণত লাশ উদ্ধারের পর যথারীতি থানায় মামলা হয়। তবে মামলা করেই ক্ষান্ত পুলিশ। এরপর আর তদন্ত এগোয় না। ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে অপরাধীরা। এসব ঘটনায় থানায় মামলার পর পুলিশ মামলার তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অদূরভবিষ্যতে নিহত ব্যক্তির হত্যার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করা হলে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করা হবে। কিন্তু মামলা পুনরুজ্জীবিত কিংবা কোন ঘটনার রহস্য উদঘাটন হয় না। আবার পূর্ব শত্র“তা কিংবা অপহরণের পরেও অনেককে হত্যার পর লাশ ফেলে দেয়া হয় যেখানে সেখানে। বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আবুল কালাম বলেন, অজ্ঞাত এক বৃদ্ধের লাশ পাওয়ার খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরিশালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত বৃদ্ধের পরিচয় পাওয়া যায়নি।