কারা আসছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২৩:৪৩, জুলাই ১১ ২০২০ মিনিট

রিপোর্ট দেশ জনপদ ॥ আওয়ামী লীগের দুইজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের পদ শূন্য হয়েছে। মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর পর ১৯ সদস্যের প্রেসিডিয়ামের আরেক সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর এখন যখন আওয়ামী লীগ রাজনীতিকেই গুরুত্ব দিচ্ছে, দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি বন্ধ করার জন্য দলকে শক্তিশালী করা এবং দলে অনুপ্রবেশ বন্ধ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিচ্ছেন তখন প্রেসিডিয়ামের পদ বেশিদিন শূন্য রাখা হবেনা বলে মনে করা হচ্ছে। মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর পরে ১৪ দলের সমন্বয়ক হিসেবে আমির হোসেন আমুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মোহাম্মদ নাসিমের স্থানে প্রেসিডিয়ামের নতুন সদস্য হিসেবে কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এখন সাহারা খাতুনের মৃত্যুর পরে প্রেসিডিয়ামের আরো একটি পদ শূন্য হলো এবং এখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মনে করছেন যে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দ্রুতই নতুন প্রেসিডিয়াম সদস্যের নাম ঘোষণা করবেন। আওয়ামী লীগের ১৯ সদস্যের প্রেসিডিয়ামের মধ্যে শেখ হাসিনা দলের সভাপতি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সদস্য সচিব হিসেবে প্রেসিডিয়ামের দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ড. আবদুর রাজ্জাক, নুরুল ইসলাম নাহিদ, আবদুল মান্নান খান, রমেশ চন্দ্র সেন, কাজী জাফরুল্লাহ, আবদুল মতিন খসরু, পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য, ফারুক খান, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান এবং শাজাহান খান এখন প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে আছেন। নতুন কাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে তা নিয়ে অনেক জল্পনাকল্পনা চলছে। আওয়ামী লীগের এক দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন যে, প্রেসিডিয়ামে সদস্য হিসেবে কাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে সেটা আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছাধীন বিষয়। তাঁর ইচ্ছা এবং দলের স্বার্থ বিবেচনা করে তিনি এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবেন। তবে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পদে তরুণরা আসবে নাকি প্রবীণদের মধ্য থেকে কাউকে নেওয়া হবে কিনা সে ব্যাপারে আলোচনা চলছে। কারণ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম হলো দলের সবথেকে শক্তিশালী জায়গা এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সব থেকে ক্ষমতাবান নেতৃত্ব। প্রেসিডিয়ামের মাধ্যমেই দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। শুধু তাই নয় আওয়ামী লীগের একজন নেতার সর্বোচ্চ স্বীকৃতি হলো প্রেসিডিয়াম কমিটির অন্তর্ভুক্ত হওয়া। এই বিবেচনা থেকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে কে থাকবেন সেটা এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গত ডিসেম্বরে কাউন্সিলের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে চমক হিসেবে এসেছিলেন শাজাহান খান, আর যৌক্তিক হিসেবে এসেছিলেন জাহাঙ্গীর কবীর নানক এবং আব্দুর রহমান। এখন প্রেসিডিয়ামে কি দলের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে কেউ আসবেন নাকি কেন্দ্রীয় কমিটির বাইরে থেকে কেউ আসবেন সেটা বড় প্রশ্ন। আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা মনে করেন যে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের মধ্য দিয়ে কাউকে প্রেসিডিয়ামে আনা হতে পারে। সেক্ষেত্রে মাহবুব উল আলমের হানিফের নাম বিবেচনা করা হতো, তবে তাঁর আকস্মিক কানাডা যাওয়ার কারণে প্রেসিডিয়াম কমিটির সদস্য হতে পারবেন না বলে ধারণা করছেন আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা। আওয়ামী লীগের যারা প্রেসিডিয়ামে রয়েছেন তাঁদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি দলীয় কার্যক্রমে তেমন সক্রিয় নন। তাঁরা নিজেদেরকে শুধুমাত্র রুটিন কাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছেন। আর একারণেই প্রেসিডিয়াম কমিটিকে শক্তিশালী করতে হলে দলের জন্য কার্যকর এবং সাংগঠনিক ক্ষমতার অধিকারী কাউকে বিবেচনা করতে হবে। সেই বিবেচনা থেকে আওয়ামী লীগের অনেকেই রয়েছেন, যেমন কেন্দ্রীয় কমিটির ১ নাম্বার সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর কথা আলোচনা করছেন। মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার নামও অনেকে বলছেন। আবার কেউ কেউ মনে করছেন যে, আওয়ামী লীগের বর্তমান যে উপদেষ্টা কমিটি রয়েছে তাঁদের মধ্যে থেকে কাউকে প্রেসিডিয়াম কমিটিতে আনা হবে। তবে এমন সম্ভাবনা খুবই কম বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতারা। তবে যেহেতু আমির হোসেন আমুকে ১৪ দলের সমন্বয়ক করা হয়েছে তাই আমির হোসেন আমু বা তোফায়েল আহমেদকে প্রেসিডিয়ামে ফিরিয়ে আনা হবে কিনা সে ব্যাপারে জল্পনাকল্পনা চলছে। কেন্দ্রীয় কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে থাকা ডা. দীপু মনি এবং ড. হাছান মাহমুদও প্রেসিডিয়ামে আসবে কিনা তা নিয়ে আওয়ামী লীগে আলোচনা কম নেই। তবে এদের বাইরে থেকে তৃণমূলের প্রবীণ নেতারাও আওয়ামী লীগে আসতে পারেন এবং এমন নেতার সংখ্যাও আওয়ামী লীগে কম নয়। তবে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে যে, প্রেসিডিয়ামে যারাই আসুক না কেন দলের জন্য যেন তাঁরা কাজ করতে পারেন, সংগঠনের জন্য যেন তাঁরা শ্রম দিতে পারেন সেই ব্যাপারটিকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে।