প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ভরসা রাখতে পারছে না মানুষ: মির্জা ফখরুল

কামরুন নাহার | ১১:৫২, জানুয়ারি ০৯ ২০২০ মিনিট

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে জনগণ ভরসা রাখতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সরকারের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ফখরুল বলেন, বক্তব্যের মধ্যে তিনি যে আশা ও ভরসা রাখতে বলেছেন, সেই ভরসা মানুষ কোত্থেকে রাখবে। অর্থনীতি চরমভাবে নিচে নেমে গেছে। যে অর্থনীতির বর্ণনা তিনি দিয়েছেন, তা তার ভাষণের মধ্যে, বাস্তবে ঠিক উল্টোটা। ব্যাংকগুলো ভেঙে পড়ছে। মানুষ আস্থা রাখবে কোথায়? তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের আয় কমে যাচ্ছে, ব্যয় বাড়ছে। প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়েছে। আজ সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় মানুষ কী করে ভরসা রাখবে। বাংলাদেশ এখন একটা রোল মডেল। এই রোল মডেল হচ্ছে দুর্নীতির রোল মডেল, দুঃশাসনের রোল মডেল- এই হচ্ছে বাংলাদেশ। ভাষণটা ওনাদের নিজেদের জন্য। ওনার নিজের আত্মতুষ্টির জন্য। ওনারা জনগণের কাছ থেকে দূরে সরে গেছেন, জনগণের ভাষা যে ওনারা বুঝতে পারছেন না, জনগণের আওয়াজ যে তারা শুনতে পারছেন না- এই বক্তব্যটা তারই প্রমাণ। বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে যে ভাষণ দিয়েছেন তাতে জাতি হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছে। একটি প্রহসনের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তারা ক্ষমতা দখল করে আছে। জাতির প্রত্যাশা ছিল সংকট নিরসনের একটি পথ তার (প্রধানমন্ত্রী) বক্তব্যে থাকবে। এ নির্বাচন বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বা এমন কোনো ইঙ্গিত বা কোনো সংলাপের কথা বলবেন; কিন্তু কোনোটাই তিনি বলেননি। এই সংকট নিরসনের জন্য তিনি কোনো পথ দেখাননি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সত্য নয়। যেমন তিনি বলেছেন, ৭৫-এর পরের বছরগুলোয় মানুষ জরাজীর্ণ ছিল, মানুষের কঙ্কাল দেহ ছিল’ এ কথাগুলো চরম উল্টো। তার আগে ৭২-৭৫ সাল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এদেশে একটি চরম দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ’৭৫-এর পরে জিয়াউর রহমানের যোগ্য নেতৃত্বে এদেশে পরিবর্তন ঘটে। আজ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক যে ভিত, তা রচনা করেন জিয়াউর রহমান। আর মুক্তবাজার অর্থনীতির মাধ্যমে তিনি অর্থনীতির ভিত গড়ে তোলেন। গার্মেন্ট সেক্টরগুলোতে যার মাধ্যমে আমরা টিকে আছি এবং রেমিটেন্স এটা জিয়াউর রহমান শুরু করেন। ওই সময় জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেন। মানুষের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দেন। এর মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসের জন্য শুধু বিএনপিকে দোষারোপ করেছেন। কিন্ত ভুলে গেছেন ওনারা যে ১৭৩ দিন হরতাল করেছেন। কেয়ারটেকার সরকারের দাবিতে সেই সময় বাসে ১১ জন ব্যক্তিকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। আর অনেক লোক নিহত হয়েছিল। দেশের রাজনীতির যে কালচার ছিল, এখনও আছে, যেটা এখন সরকার করছে। তারা হত্যা করেছে, তুলে নিয়ে গিয়ে মারছেন, নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে, গুম হয়ে যাচ্ছে। এই জিনিসগুলো তার বক্তব্যে আসেনি।