বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ৬১ যোদ্ধার করোনা জয়

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৪:০৬, জুন ২১ ২০২০ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক।। করোনা পরিস্থিতিতে ফ্রন্ট লাইনের যোদ্ধা হিসেবে যারা কাজ করছেন তাদের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ পুলিশ। যারা শুরু থেকেই করোনা পরিস্থিতিতে ভূমিকা রেখে চলছেন। করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হওয়া ব্যক্তিদের দাফন, সৎকার থেকে শুরু করে সবই করে থাকেন তারা। আর এটা করতে গিয়ে সারাদেশেই মরণঘাতী করোনাভাইরাসে ছোবলে করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঠিক একই চিত্র বরিশালেও। প্রায় প্রতিদিনই করোনা সম্পর্কিত হালনাগাদ তথ্যে উঠে আসছে বরিশাল মেট্রোপলিটন, জেলা এবং রেঞ্জে পুলিশে কর্মরত সদস্যদের নাম। তবে এর মধ্যে আশঙ্কাজনক হারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে। গত ৯ মে থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত পুলিশের এই ইউনিটে করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্য’র সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭১ জনে। তবে এখনো পর্যন্ত মৃত্যুর দুঃসংবাদ পাওয়া যায়নি। এদিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে আক্রান্ত সদস্যদের মধ্যে সুস্থতার হারও বাড়ছে। মোট আক্রান্তের মধ্যে শুক্রবার পর্যন্ত ৬১ জন পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাস থেকে সুস্থতা লাভ করেছেন বলে জানাগেছে। তবে সুস্থ হয়ে ওঠা পুলিশ সদস্যদের কাজে যোগদানের বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোন নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। অপরদিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে গত ৯ মে সর্বপ্রথম আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছিলেন উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর জোন) এর অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনারের গাড়ি চালক মাহমুদ। তারপরে অনেকেই আক্রান্ত হয়ে সুস্থতা লাভ করলেও চালক পুলিশ সদস্য মাহমুদ এই ভাইরাস থেকে রেহাই পাননি। প্রতিবারই ফলোআপ রিপোর্টে তার করোনা পজেটিভ আসছে। যদিও তাঁর মধ্যে করোনাভাইরাসের কোন লক্ষণ না থাকার পাশাপাশি তিনি পুরোপুরিভাবেই সুস্থ আছেন বলে দাবি চিকিৎসক ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের নগর বিশেষ শাখা সূত্রে জানগেছে, ‘সবশেষ শনিবার পর্যন্ত বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ১৭১ জন সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের কর্মকর্তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে আক্রান্ত ব্যক্তি হলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার প্রলয় চিসিম। কোন প্রকার উপসর্গ ছাড়াই তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হন। এছাড়াও সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতয়ালী) মো. রাসেল আহমেদসহ ইন্সপেক্টর, সাব-ইন্সপেক্টর, সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর, নায়েকসহ কনস্টেবল রয়েছেন। নগর বিশেষ শাখা সূত্র জানিয়েছে, ‘আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থতা লাভ করা ৬১ জনের মধ্যে দু’জন ইন্সপেক্টর। এরা হলেন কোতয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রহমান মুকুল ও অপরজন এমাদুল করিম। এছাড়াও চারজন উপ-পরিদর্শক, ৫ জন সহকারী উপ-পরিদর্শক ও ৫০ জনের মধ্যে রয়েছেন নায়েক ও কনস্টেবল। এদের মধ্যে আবার সুস্থতা লাভ করা নারী পুলিশ সদস্য’র সংখ্যা মাত্র একজন। যারা সুস্থ হয়েছেন তাদের মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ৮ জন। সবশেষ গত ১৬ জুন পাঁচজন পুলিশ সদস্য করোনা থেকে সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন। তবে সুস্থ হওয়া সবাই এখনো হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। এদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোন দিক দির্দেশনা দেননি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এদিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কার্যালয় সূত্রে জানগেছে, ‘চলতি মাসের শুরু থেকে পুলিশের এই শাখায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এখন প্রায় প্রতিদিনই পুলিশের মধ্যে থেকে আক্রান্ত শনাক্ত হচ্ছে। বিশেষ করে যারা আক্রান্ত হয়েছেন এবং হচ্ছেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগই পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে কর্মরত। এর বাইরে বিএমপি’র আওতাধীন চারটি থানার মধ্যে সব থেকে বেশি আক্রান্ত কোতয়ালী মডেল থানায়। এখনো যারা আক্রন্ত হিসেবে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন তাদের মধ্যে ১২ জন ঢাকা রাজারবাগ, ১৬ জন বরিশাল বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল, জেনারেল (সদর) হাসপাতালে ১২ জন ও শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন আরও ৪ জন। বাকিরা যে যার বাড়িতে বসেই চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। এ বিষয়ে  জানতে উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর দপ্তর) এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি মিটিংয়ে থাকার কারণে কথা বলতে পারেননি।