নিজস্ব প্রতিবেদক : বরগুনায় এয়ারগান দিয়ে এক ব্যাগ পাখি শিকার করেছেন দুই কারারক্ষী। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বরগুনা পৌর শহর ও আশপাশের এলাকায় মোটরসাইকেলে ঘুরে ঘুরে পাখি শিকার করেন তারা। পরে বেলা ১১টার দিকে বরগুনা পৌর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আ. কাদের সড়কে একটি ডাহুক শিকার করার সময় একজন গণমাধ্যমকর্মীর সামনে পড়লে তিনি প্রতিবাদ জানান। এ সময় ব্যাগভর্তি শিকার করা পাখি ও এয়ারগান নিয়ে দ্রুত মোটরসাইকেলে পালিয়ে যান ওই দুই কারারক্ষী।
এয়ারগান দিয়ে পাখি শিকার করা দুই কারারক্ষী হলেন- মো. হাফিজুর রহমান ও মো. রফিকুল ইসলাম। তারা দু’জনই বরগুনা জেলা কারাগারে কর্মরত। মো. হাফিজুর রহমান কারারক্ষী পদে এবং মো. রফিকুল ইসলাম সহকারী প্রধান কারারক্ষী পদে কর্মরত আছেন। এর আগেও মো. রফিকুল ইসলাম এয়ারগান দিয়ে পাখি শিকার করতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রতিবাদের মুখে পড়েন। সে সময় তিনি ভুল স্বীকার করে আর পাখি শিকার করবেন না বলে অঙ্গীকার করেছিলেন।
এ বিষয়ে বরগুনার পরিবেশকর্মী মুশফিক আরিফ বলেন, এয়ারগান দিয়ে পাখি শিকার করা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী দ-নীয় অপরাধ। যে দুই কারারক্ষী এক ব্যাগ পাখি শিকার করেছেন, তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। আইনের রক্ষক হয়ে যারা এ ধরনের কাজ করেন, তাদের সাধারণ মানুষের তুলনায় আরও কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সহকারী প্রধান কারারক্ষী মো. রফিকুল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে কারারক্ষী মো. হাফিজুর রহমান বলেন, আমি ছুটিতে ছিলাম। সকালে মো. রফিকুল ইসলাম আমাকে ডেকে নেন। এরপর আমরা আমার মোটরসাইকেলে বের হই। পাখি শিকার তিনি করেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবগত হওয়ার পর রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তার এয়ারগান জব্দ করা হয়েছে। আমার কাছ থেকেও লিখিত জবাব নেওয়া হয়েছে। এর আগেও তিনি পাখি শিকারের অভিযোগে মুচলেকা দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে বন বিভাগের বরগুনা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই।
আগামীকাল খোঁজ নিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে বরগুনা জেলা কারাগারের সুপার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি বর্তমানে ছুটিতে আছি। তবে বিষয়টি জেনেছি। অভিযুক্ত দুই জনের বিরুদ্ধেই বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে।