মাত্র ১ মিনিট বিলম্বে আসায় মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি প্রার্থী
নিজেস্ব প্রতিবেদক|১৯:৪২, ডিসেম্বর ৩০ ২০২৫ মিনিট
মাত্র ১ মিনিট দেরি করায় গণঅধিকার পরিষদের এক প্রার্থী জমা দিতে পারেননি মনোনয়নপত্র। আর ৫ মিনিট দেরি করে যাওয়ায় মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি এবি পার্টির প্রার্থী। এ দুই প্রার্থী হলেন- পিরোজপুর-২ আসনে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী আনিসুর রহমান মুন্না এবং শেরপুর-২ আসনে এবি পার্টির প্রার্থী আব্দুল্লাহ বাদশা।
মাত্র এক মিনিট দেরির কারণে পিরোজপুর-২ আসনে গণঅধিকার পরিষদের একজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ করেছেন আনিসুর রহমান মুন্না নামে এক প্রার্থী।
তিনি দাবি করেন, সময় শেষ হওয়ার আগেই জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মধ্যে থাকলেও মাত্র এক মিনিট দেরির কারণে তার মনোনয়নপত্র জমা নেননি রিটার্নিং অফিসার।
এর প্রতিবাদে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন আনিসুর রহমান মুন্না নামের ওই প্রার্থী। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ৯টা থেকে তিনি নগরীর রাজা বাহাদুর সড়কে বিভাগীয় কমিশনারের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।
ভুক্তভোগী গণঅধিকার পরিষদের পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী আনিসুর রহমান মুন্না বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পৌঁছাতে দেরি হয়। তারপরও আমি মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় বিকেল ৪টা ৪৬ মিনিটে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে উপস্থিত হই। কিন্তু গেটেই আমাকে আটকে দেওয়া হয়। গেটে অনুরোধ করার পরও তারা আমাকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। এ সময় গেটে থাকা ব্যক্তি আমাকে প্রশ্ন করেন ‘এক মিনিট কেন দেরি হলো’ সেটা আগে বলেন।
আনিসুর রহমান মুন্না বলেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই একজন এডিসি আসেন। তাকে অনুরোধ করার পর তিনি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে জানাবেন বলে চলে যান। তিনি না আসায় জেলা প্রশাসককেই আমি ফোন করি। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় জেলা প্রশাসক আমার কোনো প্রকার কথা না শুনেই মুখের ওপর বলে দেন- ‘সময় শেষ আপনার মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া যাবে না।’
আনিস বলেন, বিষয়টি বিভাগীয় কমিশনারকে জানালে তিনি একটি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। তার কথা অনুযায়ী রাতে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের বাসভবনে সামনে এসে অবস্থান নিয়েছি।
এদিকে আধাঘণ্টা পর বিভাগীয় কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান নিজের বাসভবনের মধ্যে ডেকে নিয়ে যান আনিসুর রহমানকে। সেখানে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে আবেদন করা হয়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মো. আবু সাঈদ। তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে আমার মন্তব্য নেই। তবে এটুকুই বলব তিনি যে অভিযোগ করেছেন সেটা সঠিক নেয়। তাছাড়া তিনি কতটা দেরি করে এসেছেন সেটা তিনিই ভালো বলতে পারবেন।’
পাঁচ মিনিটের জন্য কপাল পুড়লো বাদশা’র : নির্ধারিত সময়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন শেরপুর-২ সংসদীয় আসনের এক প্রার্থী। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ওই ঘটনা ঘটে।
এই আসনটিতে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির মনোনীত প্রার্থী আব্দুল্লাহ বাদশা মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে নির্ধারিত সময়সীমা বিকেল ৫টা অতিক্রান্ত হওয়ায় মনোনয়ন জমা নেয়নি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার রেজওয়ানা আফরিন। এতে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে সবার সামনেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
এ ব্যাপারে আব্দুল্লাহ বাদশা বলেন, ‘শেরপুর থেকে নালিতাবাড়ীতে আসার পথে গাড়ি সমস্যার কারণে তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে পৌঁছতে পারিনি। আমি দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছি। জনগণের কাছাকাছি গিয়েছি। তবে আমি নির্বাচন করে সংসদে না যেতে পারলেও মানুষের পাশে থাকব।’
এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার রেজওয়ানা আফরিন বলেন, ‘নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের পর মনোনয়নপত্র গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। আব্দুল্লাহ বাদশা আমার কক্ষে প্রবেশ করেছেন পাঁচটা বেজে পাঁচ মিনিটে। তিনি পাঁচ মিনিট দেরি করে এসেছেন। তাই তার মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।’