হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে সংঘর্ষ-গোলাগুলিতে নিহত ৫

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২০:৩৪, ডিসেম্বর ২৩ ২০২৫ মিনিট

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার জাগলার চরে আধিপত্য বিস্তার ও চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই বাহিনীর ৫ জন নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন। উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের জাগলার চর গ্রামে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে আলাউদ্দিন (৪০) নামে একজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি সুখচর ইউনিয়নের চর আমান উল্যাহ গ্রামের মহিউদ্দিনের ছেলে এবং স্থানীয় ‘আলাউদ্দিন বাহিনী’র প্রধান। স্থানীয়দের দাবি, নিহত অপর চারজনের মধ্যে ‘কোপা সামছু বাহিনী’র প্রধান সামছুও রয়েছেন। তবে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে বাকি চারজনের নাম-পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি। স্থানীয়দের কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, জাগলার চরের জমি এখনো সরকারিভাবে কাউকে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি। গত ৫ আগস্টের পর থেকে ‘কোপা সামছু বাহিনী’ ওই চরের জমি অবৈধভাবে বিক্রি শুরু করে। এর বিপরীতে সুখচরের ‘আলাউদ্দিন বাহিনী’ ওই জমির দখল নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। দুই পক্ষই চরের জমি বিক্রির নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইলে বিরোধ চরমে পৌঁছায়। তাদের অভিযোগ, দখলদার আলাউদ্দিনের সঙ্গে সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিম, আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম মেম্বার ও বিএনপি নেতা নবীর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। তাদের মদদেই আলাউদ্দিন বাহিনী সামছু বাহিনীকে হটিয়ে চরের দখল নিতে সংঘর্ষে জড়ায়। তারা আরো জানান, চরের দখল নিতে মঙ্গলবার সকালে কোপা সামছু, আলাউদ্দিন এবং ফরিদ কমান্ডারের বাহিনী ত্রিমুখী সংঘর্ষ ও বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত হয়। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি শুরু হলে ঘটনাস্থলেই চারজন নিহত হন। গুরুতর আহত আলাউদ্দিনকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সংঘর্ষের সময় বেশ কিছু ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দা হাছান উদ্দিন জানান, চর নিয়ে চলমান দ্বন্দ্বে তিন বাহিনী—ফরিদ কমান্ডার, শামসু বাহিনী এবং আলাউদ্দিন বাহিনী— মুখোমুখি হয়ে গোলাগুলিতে জড়ায়। এতে সামসু বাহিনীর প্রধান ও আলাউদ্দিন বাহিনীর প্রধান আলাউদ্দিন নিহত হয়েছেন। তবে ফরিদ ডাকাত তার বাহিনী নিয়ে পালিয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে এই চর এলাকায় উশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং বাহিনীগুলো এখানে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিএনপি নেতা বেলায়েত হোসেন সেলিমের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। হাতিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত বলেন, ‘নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে একটি মরদেহ রাখা আছে। চারটি মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্গম চরাঞ্চলের কারণে পুলিশ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিতভাবে জানা যাবে।’