বছরখানিক ধরে আলোহীন অষ্টম বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সেতু

এ.এ.এম হৃদয় | ২০:১৩, ডিসেম্বর ১৭ ২০২৫ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক : পিরোজপুর বছরখানিক আগে চুরি হয়ে গেছে অষ্টম বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সেতুর ৭৫০ মিটার বৈদ্যুতিক তার। ফলে সন্ধ্যার পরেই অন্ধকারে ডুবে থাকে সেতুর দুইয়ের একাংশ। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে সাধারণ মানুষের ভিতরে ছিনতাই ও চুরির আতঙ্ক। এমনকি রাত গভীর হলে চলে মাদক বেচাকেনা। জানা গেছে, খুলনা-বরিশাল মহাসড়কের সংযোগস্থল অষ্টম বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সেতু, যা স্থানীয়ভাবে বেকুটিয়ে সেতু নামে পরিচিত। বছরখানেক আগে সেতুর কাউখালী প্রান্তের ৭৫০ মিটার বৈদ্যুতিক তার চুরি হলে সেতুতে চলাচলকারী বাস ট্রাক এবং বিভিন্ন গণপরিবহনের চালক ও সাধারণ মানুষের শুরু হয়েছে দুর্ভোগ। এছাড়াও পিরোজপুর জেলা শহরে বিনোদনের উল্লেখযোগ্য কোনো স্থান না থাকায় সদর উপজেলাসহ আশেপাশের মানুষেরা সন্ধ্যার পরে ঘুরতে যান বেকুটিয়া সেতুর নিচে কাউখালী প্রান্তে। ব্রিজে আলোর ব্যবস্থা না থাকায় ছিনতাই ও চুরির আতঙ্ক নিয়ে পার হতে হয় এই সেতু। তবে বছর অতিবাহিত হলেও এখনো কর্তৃপক্ষ এ সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। স্থানীয়রা বলছে, কর্তৃপক্ষের সঠিক উদ্যোগ না থাকায় এ সমস্যার এখনো কোনো সমাধান হয়নি। চীন সরকারের সহায়তায় নির্মিত অষ্টম বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সেতুটি ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করা হয়। বর্তমানে সেতুটি বেনাপোল-খুলনা-বরিশাল-কুয়াকাটা রুটের গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগপথ। সন্ধ্যা হলেই সেতুর কাউখালী অংশে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা সম্পূর্ণ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে, ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে পড়ছেন চালক ও যাত্রীরা। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সন্ধ্যার পর এই অন্ধকার অংশ দিয়ে গাড়ি চলাচলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে। দ্রুত বিদ্যুৎ লাইন সচল না হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। পাশাপাশি ছিনতাই ডাকাতির আতঙ্ক তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের ভিতরে। আগে বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে পরিবার নিয়ে মানুষ বিকেলে সেতুতে ঘুরতে আসলেও এখন অন্ধকারের কারণে অনেকে আসতে ভয় পাচ্ছেন, কমছে দর্শনার্থীদের সংখ্যাও। এমনকি রাত গভীর হলেই মাদকের আড্ডা বসে এখানে। কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই এ সমস্যার সমাধান হচ্ছে না বলে দাবি স্থানীয়দের। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কমানোর দাবি চলাচলকারীদের। বেকুটিয়া সেতুতে ঘুরতে এসে সেলিম রেজা বলেন, আমরা সেতুতে ঘুরতে এসেছি। আগে ব্রিজে লাইট ছিলো, নামতে উঠতে ভালো হতো। বর্তমানে আশেপাশে সব অন্ধকার, ছিনতাই হওয়ার আশঙ্কা থাকে, সঙ্গে নারী বা বাচ্চা থাকলে অনেক চিন্তা সহয়ে। কর্তৃপক্ষের উচিত অতি দ্রুত বিষয়টি সমাধান করা। অটোরিক্সা চালক ইউসুফ শেখ বলেন, আগে ব্রিজে লাইট ছিল আমাদের চলাচল করতে কোনো সমস্যা হতো না। বর্তমানে সেতুর অর্ধেক জায়গা জুড়ে অন্ধকার থাকে, আমাদের আতঙ্ক নিয়ে পার হতে হয়। যেকোনো সময় ছিনতাই হতে পারে রিক্সা এবং আলো না থাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। পিরোজপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ বলেন, বেকুটিয়া সেতুর কাউখালী প্রান্তের ৭৫০ মিটার বৈদ্যুতিক তার চুরি হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত সংযোগ পুনঃস্থাপনের চেষ্টা চলছে। তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে আমরা পল্লী বিদ্যুতের সঙ্গে কথা বলেছি প্রায় ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সংযোগপূর্ন স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এছাড়াও ৭৫০মিটার তার চুরি হওয়ায় একটি মামলা করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব এ সমস্যার সমাধান করা হবে।