এক যুগেও অপসারণ হয়নি ঝুঁকিপূর্ণ ৩২ ভবন
বরিশাল নগরের ৩৫টি ভবনকে এক যুগ আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি)। তবে দীর্ঘ এ সময়ে মাত্র তিনটি ভবন অপসারণ করা হয়েছে। বাকি ৩২টি এখনো ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। ভবনগুলোয় বাস করছেন ৫ শতাধিক বাসিন্দা।
গতকাল শুক্রবার সকালের ভূমিকম্পের পর থেকে এসব ভবনের বাসিন্দারা আছেন আতঙ্কে। তাঁরা জানান, ঝুঁকি জেনেও কম ভাড়ার কারণে থাকছেন।
বিসিসির তথ্যমতে, ঝুঁকিপূর্ণঘোষিত ওই ৩২টি ভবনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বিএম কলেজের সুরেন্দ্র ভবন হোস্টেল, বগুড়া রোডের রবীন্দ্রনাথ সেনের ভবন, নগরের কাউনিয়া এলাকার জানুকি সিংহ রোডের মতি লস্করের বাড়ি, সদর রোডসংলগ্ন ফজলুল হক অ্যাভিনিউর হোটেল বাহাদুর ভবন, চিত্ত সাহার ভবন, কাটপট্টি রোডের মিল্লাত ফার্মেসি, চন্দ্রিকা ব্রাদার্স, আহম্মদ ক্লথ স্টোরস, অমৃত ভবন, সৈয়দ কামাল হোসেন রুবেলের ভবন, সৈয়দ জুম্মান ব্রাদার্স, চিত্ত সাহা ভবন ও সাধনা ঔষধালয়, ফজলুল হক অ্যাভিনিউর গোল্ডেন টাওয়ার ভবন, হাসপাতাল রোডের স্টার টেইলার্স ভবন এবং বগুড়া রোডের মাহবুব হোসেনের ভবন, সার্কুলার রোডের সৈয়দ মনছুর আহমেদের ভবন, ঈশ্বর বসু রোডের সৈয়দ মঞ্জিল, অমৃত লাল কলেজের মান্নান মৃধার ভবন, কালুশাহ সড়কের জালাল আহমেদের ভবন, বগুড়া রোডের সালাম চেয়ারম্যানের পুরোনো ভবন, হাজী ইসরাইলের ভবন, মেডিকেল কলেজের সামনের কণিকা, কলেজ রোডের ফরিদ উদ্দিন ভবন, উপজেলা পরিষদের পুরোনো ভবন, কাউনিয়ার প্রধান সড়কের বেনী লাল গুহ ও রুপাতলীর নলছিটি প্লাজা।
ঝুঁকিপূর্ণ দেবেন্দ্র ভবনের বিষয়ে বিএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শেখ মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ছাত্রাবাসটিতে বর্তমানে কেউ থাকে না, আগেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে বনমালী গাঙ্গুলী ছাত্রীনিবাসের একটি ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে।
এখন জরিপ করলে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংখ্যা অর্ধশত ছাড়িয়ে যেতে পারে উল্লেখ করে বিসিসির উচ্ছেদ শাখার প্রধান স্বপন কুমার দাস বলেন, ‘২০১৩ সালে নগরের ৩৫টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়। এরপর ৩টি অপসারণ করা গেছে। বাকিগুলো অপসারণের জন্য বিভিন্ন সময় চিঠি দেওয়া হয়েছে; কিন্তু তাঁরা শুনছেন না। চেষ্টা করছি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো অপসারণ করার।’
যেকোনো দুর্যোগে এসব ভবনে বসবাসকারীদের প্রাণহানির আশঙ্কাও করছেন পরিবেশবাদীরা। বরিশাল বিভাগ পরিবেশ ও জন সুরক্ষা ফোরামের আহ্বায়ক শুভঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, ‘যেকোনো সময় যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। পাশাপাশি প্রাণহানির শঙ্কা তো থেকেই যায়। তাই আগেই আমাদের সতর্ক হয়ে এ ভবনগুলো ভেঙে ফেলা উচিত। অন্যথায় ভূমিকম্পের মতো বড় দুর্যোগ ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটাতে পারে।’
