রিসোর্টের নামে বিসিসির উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বাতিলের দাবি

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৯:২৬, নভেম্বর ২১ ২০২৫ মিনিট

কুয়াকাটায় রিসোর্টের নামে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বাতিলের দাবি জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। আজ বৃহস্পতিবার নগরীর অশ্বিনীকুমার হলের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় দলটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দলের সমন্বয়কারী দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলু বলেন, বিসিসি পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটায় রিসোর্ট করার জন্য ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭.৩২ শতাংশ জমি ক্রয় করেছে। ইতিমধ্যে সদ্য সাবেক প্রশাসক রায়হান কাওছারের নেতৃত্বে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বায়না দলিলও সম্পন্ন হয়েছে।

অথচ বর্তমানে সিটি করপোরেশনের ৩৮৪ কোটি টাকা দেনা রয়েছে। কর্মরতদের মধ্যেও রয়েছে বেতনবৈষম্যের অসন্তোষ। এ ছাড়া সিটি করপোরেশন নানা সমস্যায় নিমজ্জিত। এর মধ্যে অন্যতম নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নগর পরিবহনের ব্যবস্থার বেহাল দশা, ড্রেনেজ ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার খারাপ অবস্থা। মশক নিধন ও ডেঙ্গু প্রতিরোধ ব্যবস্থার ভঙ্গুর দশা।

আবদুর রশিদ নীলু বলেন, ‘বর্জ্য অপসারণে নিযুক্ত কর্মচারীরা সম্পূর্ণ অনিরাপদ পরিবেশ পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁদের জন্য কোনো নিরাপত্তা সরঞ্জামের ব্যবস্থা নেই। প্রশ্ন থাকে, তাঁদের সেফটি গিয়ারের জন্য বরাদ্দ কার পকেটে যায়? এ ছাড়া নগরবাসীর সুপেয় পানির জন্য কোটি টাকা ব্যয়ে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট দুটি এখনো চালু করা যায়নি। এই বেহাল দশার মধ্যে সিটি করপোরেশনের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে রিসোর্ট তৈরির মতো বিলাসবহুল প্রকল্প গ্রহণকে সদ্য সাবেক প্রশাসক রায়হান কাওছার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কাজ বলে আমরা মনে করি।’

আবদুর রশিদ আরও বলেন, ১৬ নভেম্বর বরিশাল সিটি করপোরেশনের উচ্চভিলাষী নাগরিক স্বার্থবিরোধী প্রকল্প বাতিল চেয়ে গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ১৭ নভেম্বর বিষয়টি আমলে নিয়ে সিটি করপোরেশনের বিলাসী প্রকল্পের জন্য জমি ক্রয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। আদালত আগামী ৬ মাসের জন্য এ কার্যক্রম স্থগিত রাখারও আদেশ দিয়েছেন।

এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলু বলেন, ‘আমরা বিসিসির রিসোর্ট কেনার বিলাসী প্রকল্প বাতিল চাই, অন্যথায় দুদকে মামলা করব।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের নির্বাহী সমন্বয়কারী আরিফুর রহমান মিরাজ, সহনির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হোসেন মারুফ, অর্থ সম্পাদক ইয়াসমিন সুলতানা, রাজনৈতিক শিক্ষা ও দপ্তর সম্পাদক হাছিব আহমেদ, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন জেলা সাধারণ সম্পাদক রাইদুল ইসলাম সাকিব প্রমুখ।

এদিকে গণসংহতি আন্দোলনের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন বরিশাল সিটি করপোরেশন কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনিচুর রহমান। তিনি বলেন, ‘গণসংহতি আন্দোলনের এই দাবির প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন আছে। কেননা সাবেক প্রশাসক রায়হান কাওছার কুয়াকাটায় রিসোর্টের জন্য জমি কেনার নামে বায়নার ৫ কোটি টাকার মধ্যে ২ কোটি আত্মসাৎ করেছেন। তাঁর সঙ্গে জমি কেনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিসিসির কয়েকজন স্টাফও জড়িত।’ আনিচুর রহমান আরও বলেন, প্রশাসকের অনিয়ম এবং তাঁদের ১২১ জনকে স্থায়ীকরণের দাবিতে বৃহস্পতিবারও কর্মচারীরা নগর ভবনে বিক্ষোভ করেছেন।

এ ব্যাপারে কথা বলতে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব রুম্পা সিকদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।