স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় বরগুনার শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
এ.এ.এম হৃদয়|১৮:০১, নভেম্বর ২০ ২০২৫ মিনিট
নারী নির্যাতন দমন আইনে দায়ের হওয়া মামলায় বরগুনা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গত মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৫ অক্টোবর জসিম উদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রী লাভলী আক্তার নিপা আদালতে নারী নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলায় তিনি ১ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৬৬ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। অভিযোগ আমলে নিয়ে আদালত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার দরখাস্তের বিবরণীতে বাদী উল্লেখ করেন, বরগুনা সদর উপজেলার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের একটি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি থাকাকালে প্রবাসীর স্ত্রী লাভলী আক্তার নিপার সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে তোলেন জসিম উদ্দিন। পরে পারিবারিক চাপ তৈরির মাধ্যমে নিপাকে তার স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করেন। পরে ২০২২ সালের ২৫ জুন ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, বিয়ের সময় জসিম নিজেকে অবিবাহিত হিসেবে পরিচয় দেন। পরে বিষয়টি জসিম উদ্দিনের প্রথম স্ত্রী মমতাজ বেগম জানতে পারলে দুই পরিবারের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দেয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে স্থানীয়ভাবে মীমাংসার অংশ হিসেবে চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল পুনরায় ৯১ লাখ টাকা দেনমোহরে নিপাকে বিয়ে করেন জসিম এবং একসঙ্গে বসবাস শুরু করেন।
বাদী আরও অভিযোগ করেন, প্রথম স্ত্রী বিয়েটি মেনে না নেওয়ায় পারিবারিক চাপে জসিম উদ্দিন নিপাকে তালাক দেন। এমনকি ২ অক্টোবর প্রথম স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে নিপার বাড়িতে গিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন, যার ফলে মানসিক চাপে নিপা অসুস্থ হয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন।
পরে দেনমোহর ও খোরপোশের দাবিতে নিপা আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে চট্টগ্রামের পাহারতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী লাভলী আক্তার নিপা সাংবাদিকদের বলেন, ‘মুসলিম শরিয়ত মোতাবেক আমার ন্যায্য অধিকার ফেরত পেতে মামলা করেছি। আদালতের প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত জসিম উদ্দিনের কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।’