ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা সড়কের জমি অধিগ্রহণ শুরু
নিজেস্ব প্রতিবেদক|২১:১০, নভেম্বর ০৫ ২০২৫ মিনিট
দক্ষিণাঞ্চলের ছয় জেলার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে পদ্মা সেতুর প্রত্যাশিত সুফল থেকে বঞ্চিত হলেও অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান ঘটছে। ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা পর্যন্ত সড়ককে চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্পের অধীনে জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।
বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উদ্যোগে বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি, রহমতপুর ও মাধবপাশা ইউনিয়নের বিভিন্ন মৌজায় মোট ৪০.৭৫ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। জমির মালিকদের দ্রুত প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ দাবির আবেদন দাখিলের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে মাঠপর্যায়ে জরিপ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে এবং শিগগিরই ক্ষতিপূরণ প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হবে। বিজ্ঞপ্তিটি জারি করেন বরিশালের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সমাপ্তি রায়।
এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বলেন, বাবুগঞ্জ উপজেলাধীন এলাকার জমি অধিগ্রহণের নোটিশ উপজেলা নির্বাহী অফিসে সাঁটানো হয়েছে। জনগণের সুবিধার্থে নোটিশ বোর্ডে সংশ্লিষ্ট জমির দাগ ও খতিয়ান নম্বর দেওয়া হয়েছে, যাতে জমির মালিকরা সহজেই নিজেদের জমি শনাক্ত করে আবেদন করতে পারেন। আমরা পুরো প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ ও জনবান্ধবভাবে সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি। তিনি আরও বলেন, ভাঙ্গা-কুয়াকাটা মহাসড়কটি চারলেনে উন্নীত হলে এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা হবে আরও গতিশীল, এতে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।
উল্লেখ্য, বরিশাল-ফরিদপুর এবং বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক দক্ষিণাঞ্চলের ১১টি জেলার মানুষের মূল যোগাযোগ পথ। ৫৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পদ্মা সেতু ও সংযুক্ত এক্সপ্রেসওয়ের সুফল পুরোপুরি পেতে হলে এই মহাসড়কের উন্নয়ন অপরিহার্য।
২০২২ সালের জুনে পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে বরিশাল অঞ্চলের মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে দুর্ঘটনা, যানজট ও ভোগান্তি বেড়েছে। বর্তমানে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ৯১ কিলোমিটার সড়কে যানবাহনের গতি কমে যাওয়ায় যাত্রীদের সময় ক্ষয় হচ্ছে।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়কটি খুব শিগগিরই চারলেনে উন্নীত হবে বলে আমরা আশাবাদী। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। ঢাকা থেকে বরিশাল ও উপকূলীয় জেলাগুলোর যাতায়াত সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে। একই সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনাও উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে।
দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ আশা করছে, ভাঙ্গা-কুয়াকাটা ৪ লেন সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পদ্মা সেতুর প্রকৃত সুফল অবশেষে তারা ভোগ করতে পারবে।