বরিশালে জামিনে বের হয়ে হত্যা মামলা প্রত্যাহারের হুমকি
এ.এ.এম হৃদয়|২১:০৬, নভেম্বর ০৫ ২০২৫ মিনিট
হত্যা মামলা প্রত্যাহারের জন্য অব্যাহত হুমকির মুখে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বুধবার (৫ নভেম্বর) বেলা সাড়ে এগারোটায় বরিশাল প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহতের বৃদ্ধা মা ও মামলার বাদী নিলুফা বেগম। এসময় নিহতের স্ত্রী, সন্তানসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালীরা রাতে বাড়ি থেকে কৃষক সোহেল খানকে ডেকে নিয়ে মব সৃষ্টি করে ডাকাত আখ্যায়িত করে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় বাকেরগঞ্জ উপজেলার চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার বাদি নিহতের মা নিলুফা বেগম লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন-গত ২৭ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি তার ছেলে কৃষক সোহেল খানকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে সোহেলের আর ঘরে ফিরে আসেনি। পরেরদিন (২৮ নভেম্বর) সকালে পার্শ্ববর্তী খানবাড়ি জামে মসজিদের পাশের কাঁচা রাস্তায় সোহেলের লাশ পাওয়া যায়। তার শরীরে ধারালো অস্ত্রের কোপ ও লাঠির আঘাতের একাধিক চিহ্ন ছিলো।
নিলুফা বেগম বলেন-আমার ছেলেকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য মব সৃষ্টি করে এলাকায় ডাকাতির নাটক সাজানো হয়। এ ঘটনায় আমি (নিলুফা) বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করি। পুলিশ কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করলেও রহস্যজনকভাবে তারা জামিনে বেরিয়ে মামলা প্রত্যাহারের জন্য আমাদের পুরো পরিবারকে বিভিন্নধরনের ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি অব্যাহত রেখেছে।
বাদী নিলুফা বেগম আরও বলেন, আসামিদের অব্যাহত হুমকির মুখে আমরা এখন চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি। ইতোমধ্যে থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। এছাড়াও এলাকাবাসী সকল আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়ে গণস্বাক্ষর দিয়ে প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন। এতে আসামিরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোন ভূমিকা নেয়া হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে নিহতের স্বজনরা বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে মব সৃষ্টি করে সোহেল খানকে হত্যা করেছে। সংবাদ সম্মেলনে বাদী তাদের পরিবারের সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তা পেতে এবং সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আসামিদের গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চাঞ্চল্যকর সোহেল খান হত্যা মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। কিছু আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এজাহারভূক্ত বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, নিহত সোহেল খান (৩৫) বাকেরগঞ্জ উপজেলার কবাই ইউনিয়নের চর কবাই গ্রামের বাসিন্দা। গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালীরা বাড়ি থেকে সোহেলকে ডেকে নিয়ে যায়। পরেরদিন সকালে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা নিলুফা বেগম বাদী হয়ে বাকেরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।