বরিশালে অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধে ১৫ সাংবাদিক সংগঠনের যৌথ বিবৃতি
নিজেস্ব প্রতিবেদক|২২:৩৭, অক্টোবর ১৭ ২০২৫ মিনিট
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালে সম্প্রতি সাংবাদিকতার নামে সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে জিন্মি করে চাঁদাবাজির ঘটনা বেড়ে গেছে। সাংবাদিকতার মতো মহান এই পেশাকে দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে কলুষিত করছে কতিপয় সাংবাদিক নামধারী চাঁদাবাজ। সংঘবন্ধ এই অসাধু চক্রের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বরিশালে কর্মরত পেশাদার সৎ সাংবাদিকরা বিব্রত ও লজ্জিত।
নিন্দনীয় এমন প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটায় বরিশাল প্রেসক্লাবে সাংবাদিক মাইনুল হাসান মিলনায়তনে পেশাদার সাংবাদিকদের ১৫টি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এক জরুরি সভায় মিলিত হন। বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম খসরু’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ অখ্যাত পত্রিকা, অনুমোদনহীন অনলাইন পোর্টাল ও কথিত অনলাইন টিভি’র নামধারী চাঁদাবাজ সাংবাদিকদের অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধে বিভিন্ন মতামত তুলে ধরেন।
সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘সাংবাদিকতার নামে চাঁদাবাজ চক্রের অপতৎপরতা এতোই বেপরোয়া হয়ে পড়েছে যে, নামধারী ওই কথিত সাংবাদিক চক্র গভীর রাতে সড়কে পণ্যবাহী ট্রাক থামিয়েও চাঁদাবাজি করে। সড়কে চলে প্রেস লেখা অগণিত মোটরসাইকেল। এই চক্র অনুমোদনহীন তথাকথিত ফেসবুক টিভির বুম নিয়ে সর্বত্র ঘুরে বেড়ায়। সংবাদ মূল্য নেই বা সংবাদ প্রকাশের যোগ্য নয়- এমন কিছু বিষয়ের ঘটনাস্থলে গিয়ে এই চক্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের কাছে চাঁদা দাবি করে। একাধিক ধর্ষণ মামলায় জেলখাটা ব্যক্তিও এই নগরীতে অখ্যাত পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত।
সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ মনে করেন, এইসব গর্হিত কাজ এমন অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, প্রকৃত পেশাদার সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধ জোট গঠন করা প্রয়োজন। সভায় অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধে একটি অ্যাকশন কমিটি গঠন করা হয়। অ্যাকশন কমিটি অপসাংবাদিকতা রোধে এরই মধ্যে মাঠপর্যায়ে চাঁদাবাজ সাংবাদিকদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে। একই সঙ্গে সাংবাদিকতার নামে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সভায় এখন থেকে কেউ যদি সাংবাদিকতা পরিচয়ে চাঁদা বা অনৈতিক সুবিধা দাবি করে তাহলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম খসরু (০১৭১১-৩৭২৪৬৪), বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ (০১৭১১-২৬১১৮৮) এবং বরিশাল জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আযাদ আলাউদ্দীনকে (০১৭১২-১৮৯৩৩৮) ফোনে তাৎক্ষণিক জানানোর জন্য ভুক্তভোগী মহলকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন- বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ, বরিশাল জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আযাদ আলাউদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক মো. হাফিজুর রহমান হিরা, প্রকাশক ও সম্পাদক পরিষদের সভাপতি কাজী মিরাজ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক এম লোকমান হোসাইন, সাংবাদিক ইউনিয়ন বরিশালের সভাপতি সাইফুর রহমান মিরন, সাধারণ সম্পাদক ফিরদাউস সোহাগ, বরিশাল ইলেকট্রনিক্স জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুরাদ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন, বরিশাল টেলিভিশন মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হুমায়ুন কবির, ন্যাশনাল ডেইলিজ ব্যুরো চিফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আকতার ফারুক শাহিন, বরিশাল প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পুলক চ্যাটার্জি, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার বরিশাল বিভাগীয় সভাপতি বীরেন্দ্রনাথ সমাদ্দার, বার্তা সম্পাদক ফোরাম বরিশালের আহ্বায়ক জিয়া শাহিন, সদস্য সচিব খান রুবেল, বরিশাল সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শাহিন হাসান, সিনিয়র সাংবাদিক কমল সেনগুপ্ত, টেলিভিশন ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাহিন সুমন, বরিশাল ফটো সাংবাদিক পরিষদের সভাপতি খান মনিরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক আল আমিন সাগর ও বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন বরিশালের সভাপতি জুয়েল রানা এবং সাধারণ সম্পাদক রাতুল আহমেদ।