বরিশালে পিতার রেখে যাওয়া সম্পত্তি এক সন্তানের দখলে, বঞ্চিত ১২ সন্তান

নিজেস্ব প্রতিবেদক | ২১:০৯, অক্টোবর ১৫ ২০২৫ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাবার দুই বিয়ে, দুই ঘরে সন্তান ১৩ জন। সবার বড় প্রথম ঘরের সন্তান আনিচুর রহমান। তবে ভাই বোনদের মধ্যে অনিছুর রহমান সবার বড় থাকায় বাবার মৃত্যুর পরে বাবার দোকান ও সম্পত্তি সবই কৌশলে তার দখলে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বাবার সম্পত্তি থেকে ১৩ ভাই-বোন। ভাই আনিছুর রহমান তিনি নিজেকে কখনও বিএনপি নেতা ও কখনও জামায়েতের নেতা পরিচয় দিয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দিনের পর দিন অন্যায় ভাবে ভাই-বোনদের সম্পত্তি তার দখলে রেখেছে। তাদের বাবা আদম আলী শিকদারর ২০০৬ সালে মৃত্যু বরন করেন। এরপরে দুই ঘরের ১৩ ভাই-বোন বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তির অশিংদার থাকার শর্তে বড় ভাইয়ের কাছে তাদের অংশ বুঝে নিতে চাইলে তাদেরকে সম্পত্তি না দিয়ে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজিসহ বেশ কিছু ধারায় পৃথক তিনটি মামলা দিয়ে হয়রানী করে যাচ্ছে প্রায় দুই বছর ধরে। সৎ ও আপন ভাইরা মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি এবং বাবার রেখে যাওয়া সম্পদের অংশ বুঝে পাওয়ার জন্য স্থানীয় থেকে শুরু করে আদালতে গিয়ে তাদের অংশ বুঝে পায়নি। বড় ভাই আনিছুর রহমানের টাকা এবং ক্ষমতার কাছে অসহায় হয়ে দাড়িয়েছেন ভুক্তভোগী ভাই বোনরা। আনিছুর রহমান শুধু ভাইদের সাথেই প্রতারনা করেনি। তিনি তার সৎ মায়ের সাথেও প্রতারনা করেছেন। যেমন স্বামী আদম আলীর মৃত্যুর পরে তার স্বামীর অংশ থেকেও তাকে বঞ্চিত করেছেন। স্থানীয় একাধিক ব্যাক্তি বলেন, আদম আলীর আমাদের এলাকার এক জন ব্যবসায়ী ছিলেন। তবে তার বিবাহ ছিলো দুটি। দুই ঘরে সন্তানও রয়েছে ১৩ জন। আদম আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী মোর্শেদা বেগম এখনও জীবিত রয়েছেন। তার পরে তার স্বামীর দোকান থেকে আয় হওয়া অর্থ থেকে তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বর্তমানে আদম আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী মোর্শেদা তার সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অন্যদিকে প্রথম ঘরে ৭ সন্তানও মানবেতর জীবনযাপন করে যাচ্ছেন। আদম আলী প্রথম ঘরের সন্তান ও আনিছুর রহমানের আপন ছোট ভাই খলিলুর রহমান বলেন, বাবার মৃত্যুর পরে আমার বড় ভাই তিনি আমি সহ সৎ ভাই-বোনদেরকে বাবার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেছেন। আমাদের বাবার রেখে যাওয়ার সম্পতির অশিংদার হিসেবে বড় ভাইয়ের কাছে আমাদের প্রাপ্ত অংশ বুঝে নিতে গেলে তিনি প্রথমেই বলেন বাবার মৃত্যুর আগে সব সম্পত্তি বিক্রি করে গেছে। কিন্তু আমরা ভাইয়েরা খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারি এবং জানি বাবা মৃত্যুর আগে কোন সম্পত্তি বিক্রি অথবা বড় ভাই আনিছুর রহমানকে দিয়ে যায়নি। কিন্তু বড় ভাই তিনি অন্য এক ব্যক্তির কাছ থেকে ০.১৯ পয়েন্ট জমি কিনে। যা তার দখলে রয়েছে। পাশেই রয়েছে বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি যা টাকার জোরে ভূয়া একটি দলিল করে আনিছুর রহমান ক্রয়কৃত সম্পত্তি বলে দাবি করে আসছেন। মূলত ওই জমি আমাদের বাবার রেখে যাওয়া। বিরোধীয় সম্পত্তির মূল মালিক হচ্ছেন বাংলাদেশ সরকারের বিআইডব্লিটিএ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেখান থেকে আদম আলী শিকদার ১৯৮০ সালে নিয়ম অনুয়ায়ী বার্ষরিক হিসেবে ১৫ ফুট বাই ৯ ফ্রুট সম্পত্তি লিজ নেন দোকান ঘর করার জন্য। যার খাজনা থেকে শুরু করে সকল কাগজ পত্র লিজকৃত আদম আলী শিকার তার নামে রয়েছে এখনও। এছাড়াও ২০০৩ সাল পর্যন্ত খাজনা পরিষদ করেন আদম আলী। এই লিজকৃত সম্পত্তি নিয়ে আদালতে একটি মামলা চলমান থাকে র্দীঘ বছর। পরে আদালত বিআইডব্লিটিএ পক্ষে রায় ঘোষনা দেন। পাশাপাশি জমিতে ভোগদখলীয় যে ব্যক্তি রয়েছেন সেই ব্যক্তিই ভোগ দখল করবেন বলে উল্লেখ করেন আদালত। লিজকৃত সম্পত্তির খাজনা ২০০৩ সালের পর উল্লেখ্য জমির কোন খাজনা দেয়নি কেউ। বিআইডব্লিটিএ’র লিজকৃত সম্পত্তির মালিক আদম অলী মৃত্যুর পরে তার বড় ছেলে আনিছুর রহমান একাই র্দীঘ দিন ধরে দখল করে রেখেছেন। এবং সেখানে থাকা দোকানঘর থেকে আয় বাবদ প্রতিমাসে ৪৫ হাজার টাকা করে বছরের পর বছর তিনি একাই নিয়ে যাচ্ছে। যার হিসাব করলে কয়েক লক্ষ টাকা হবে। স্বামীর রেখে যাওয়া এবং বাবার সন্তান হিসেবে অংশীদার হিসেবে অংশ বড় ভাইর কাছে বুঝে নিতে গেলে হামলা-মামলা করে দূরে রাখা রাখেন আপন/সৎ ভাই বোনদের। স্থানীয় থেকে শুরু করে থানা পুলিশ এবং কি আদালতে বিষয়টি গড়ালেও এখন পর্যন্ত কেউই কোন সামাধান দিতে পারে বলে অভিযোগ করেন ভুক্কভোগী সন্তানরা। বাবার বঞ্চিত সম্পত্তির অংশ বুঝে পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন আপন/সৎ সন্তানরা। সৎভাই সোহেল শিকদার বলেন, বড় ভাই হয়েও ছোট ভাই-বোনদের সাথে করেছেন প্রতারনা সৎ বড় ভাই আনিছুর রহমান। শুধু তাই নয় তাদের বাবার সসম্পতি থেকে শুরু করে সব কিছু থেকেই বঞ্চিত করেছেন তিনি। আনিছুর তার অন্য ভাই বোনদের পিতার সম্পতি থেকে বঞ্চিত করেও শান্ত হয়নি। পিতার সম্পত্তি একাই আত্মসাত করার জন্য তিন ভাই ও এক ভাইয়ের ছেলেকে বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে আসছে র্দীঘ দিন ধরে। আনিছুর রহমান একজন স্বাভলম্বী। অর্থনৈতিক অবস্থাও ভালো রয়েছে তার। অন্য ১২ ভাই বোন অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক খারাপ থাকায়। আপন ছোট ভাই-বোন এবং কি সৎ ঘরের ভাই বোনদের অশিংদার তাদের পিতার পৈত্তিক সম্পতি থেকে বঞ্চিত করেছেন জাল দলিল করে। বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে ভাই বোনদের বঞ্চিত করার বিষয়টি নিয়ে পুরো পোর্ট রোড এলাকাজুড়ে চলছে নানা আলোচনা-সমলোচনা।