স্ত্রীর গলায় ছুরি চালিয়ে পালালেন স্বামী

ফরিদপুরে স্বামীর হাতে লিপি বেগম (৪৫) নামে এক গৃহবধূ খুন হয়েছেন। পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফরিদপুর শহরের ভাটি লক্ষ্মীপুর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহের জেরে ঝগড়া শুরু হলে একপর্যায়ে স্বামী মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে কালা (৬১) কোমরে থাকা ছুরি দিয়ে স্ত্রীর গলায় সজোরে আঘাত করে পালিয়ে যান। পরে লিপি বেগমকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার পর থেকে নিহত লিপি বেগমের স্বামী মো. শফিকুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।
নিহতের পরিবার ও থানা সূত্রে জানা যায়, শহরের ভাটি লক্ষ্মীপুর এলাকার শফিকুল ইসলাম ও লিপি বেগম দম্পতির এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলছিল। একপর্যায়ে স্বামী শফিকুল ইসলাম বাড়ি ছেড়ে চলে যান। বৃহস্পতিবার তিনি বাড়িতে ফিরে জামাকাপড় নিয়ে ঢাকায় চলে যাওয়ার কথা বলেন। এরপর তিনি রুমে ঢুকে স্ত্রী লিপি বেগমের গলায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে কাপড়চোপড় নিয়ে পালিয়ে যান।
প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের নাতনি স্মৃতি আক্তার (১২) জানান, দাদা রুমে ঢুকে দাদিকে শীতের কাপড় দিতে বলেন। একপর্যায়ে দাদা একটি ছেলের নাম উল্লেখ করে দাদিকে জিজ্ঞেস করেন, ‘তোমার সঙ্গে তার কী সম্পর্ক?’ এ নিয়ে দাদা-দাদির মধ্যে ঝগড়া বাধে। পরে দাদা দাদিকে কোরআন শরীফ ছুঁয়ে শপথ করতে বলেন। দাদি রাজি না হতেই দাদা কোমর থেকে ছুরি বের করে দাদির গলায় পোচ দেন। এ সময় আমার চিৎকারে লোকজন চলে আসে।
নিহতের ছেলে পনির ইসলাম (২৮) জানান, বাবা-মায়ের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। বুধবার রাতে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়, এরপর বাবা বাড়ি থেকে চলে যান। পরের দিন বৃহস্পতিবার সকালে বাবা বাড়িতে জামাকাপড় নিতে এসে মায়ের গলায় ছুরি মেরে পালিয়ে যান।
মরদেহের সুরতহাল প্রস্তুতকারী ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক লিপি বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।