শিশুদের রংতুলিতে বরিশাল ডিসি লেকে দেয়াল নির্মাণের প্রতিবাদ

দেয়ালে ঢাকা পড়ছে বরিশালের ঐতিহ্যবাহী বেলস পার্কসংলগ্ন ডিসি লেকের সৌন্দর্য। গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের নির্দেশে এই উন্মুক্ত জলাশয়টি দেয়াল দিয়ে ঘিরে ফেলার কাজ শুরু হয়। নগরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্থানটিকে খাঁচায় আবদ্ধ করার প্রতিবাদে রোববার লেকের পাড়ে এক প্রতিবাদী চিত্রাঙ্কন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। ‘কালের সাক্ষী আমরাও’ শীর্ষক এই আয়োজনে শিশুরা রংতুলির আঁচড়ে প্রকৃতি ধ্বংসের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে।
অর্ধশতাধিক শিশু এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়। তাদের আঁকা ছবিতে ফুটে ওঠে প্রকৃতির প্রতি নিখাদ ভালোবাসা। এদিন ‘প্রকৃতিকে করলে বন্দী, শহর হারাবে সৌন্দর্য’, ‘অচেতন দেয়াল নয়, সচেতনতা গড়ুন’ এমন নানা স্লোগানে সজ্জিত প্ল্যাকার্ড হাতে শিশুরা লেকের পাড়ে অবস্থান নেয়। তাদের ভাষ্য, ‘ডিসি লেক আমাদের প্রিয় জায়গা। এখানে মা-বাবার সঙ্গে বেড়াতে আসি। পুকুরপাড়ে বসি, ঠান্ডা বাতাসে হাঁটি। বেলস পার্কের ঐতিহ্য দেখি। কিন্তু এখন এটাকে চিড়িয়াখানার মতো খাঁচায় বন্দী করা হচ্ছে।’
শিশুদের আঁকা ছবিতে ফুটে ওঠে এই অভিমান। কর্মসূচি শেষে ৫০ টির মতো প্রতিবাদী ছবি নির্মাণাধীন দেয়ালের পিলারে টাঙিয়ে দেওয়া হয়।
সংহতি জানাতে এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে হাজির হন নাট্যব্যক্তিত্ব শুভঙ্কর চক্রবর্তী, চিত্রশিল্পী আবদুস সোবাহান বাচ্চু, চিত্রশিল্পী চন্দ্রশেখর বাবুল, বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ও স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির সদস্যসচিব ডা. মিজানুর রহমান, সিপিবির মিজানুর রহমান সেলিম, বাসদের ডা. মনীষা চক্রবর্তী প্রমুখ। তাঁরা অবিলম্বে দেয়াল নির্মাণ বন্ধ করে জলাশয়টি উন্মুক্ত করে দেওয়ার দাবি জানান।
ডিসি লেকে দেয়াল নির্মাণের প্রতিবাদে গত মাস থেকে মানববন্ধন, বিক্ষোভ, স্মারকলিপি ও গণস্বাক্ষর সংগ্রহের মতো নানা কর্মসূচি পালন করছেন স্থানীয়রা। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, লেকের পাড়ে অসামাজিক কার্যকলাপ, মাদক সেবন ও ছিনতাই রোধে দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে।