বিতর্কিত অতীত: ক্ষমতার উৎস নিয়ে প্রশ্ন !

নিজেস্ব প্রতিবেদক | ১৮:৩৭, সেপ্টেম্বর ২১ ২০২৫ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম, যিনি নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত, তার ক্ষমতার উৎস নিয়ে সচেতন মহলে উদ্বেগ ও প্রশ্ন উঠেছে । একাধিক দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় অভিযুক্ত এই শিক্ষক কীভাবে পুনরায় ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে বসলেন তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে । ২০০৫ সালে ঝালকাঠি সরকারি বালক স্কুলে কর্মরত অবস্থায় নুরুল ইসলাম একটি আবাসিক হোটেলে ধানসিঁড়িতে নারীসহ জনতার হাতে ধরা পড়েন । জনতার হাতে আটক হওয়ার পর বিষয়টি ব্যাপক আলোচনায় আসে । গত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের ১৭ বছরের নিজেকে মুজিব কর্মী পরিচয় দেয়া নুরুল ইসলাম বিপুল পরিমাণ ঘুষের মাধ্যমে আবারও বরিশাল জিলা স্কুলে যোগদান করেছে । তার এই যোগদানের পরপরই একাধিক সংবাদ প্রকাশ হলেও বহাল তবিয়তে আছেন নুরুল ইসলাম । খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে একাধিক বই লেখা শিক্ষক নুরুল ইসলাম এখন জামায়াতের তকমা লাগাতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন । নাম প্রকাশ না করার শতে ঝালকাঠি হরস চন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক বলেন, গত দুই বছরে শিক্ষক নুরুল ইসলাম স্কুল ফান্ডের প্রায় বিশ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন । ত্রান তহবিল থেকে পাঁচবার বরাদ্দ আনলেও এক টাকাও কোথাও খরচ করেননি । ব্যান্ড দলের পোশাক, স্কুলের সীমানা প্রাচীর ও ছাত্রীদের দোয়া মিলাদের নামে অর্থ বরাদ্দ আনলেও কোনো টাকা খরচ করেননি শিক্ষক নুরুল ইসলাম । কোনো ধরনের রেজুলেশন ছাড়াই এসব টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তিনি । শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেয়া বার্ষিক বরাদ্দ আনলেও সেই টাকা স্কুলের কোনো কাজে না লাগিয়ে নিজেই হজম করেছেন তিনি । এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের বেতন পরিশোধের জন্য স্কুল কমিটি আইটি সেন্টারের সঙ্গে চুক্তি করে, যেখানে শিক্ষার্থী প্রতি দুই টাকা খরচের চুক্তি হয়েছিল। তবে নুরুল ইসলাম এই চুক্তি বাতিল করে, তার এক আত্মীয়ের আইটি সলিউশনের সঙ্গে নতুন চুক্তি করেন । যেখানে শিক্ষার্থী প্রতি খরচ ছিল দশ টাকা । এর ফলে, তিনি বছরে কয়েক লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন । সূত্রটি আরও জানায়, নুরুল ইসলাম ঝালকাঠি থাকাকালীন তার বাসার সকল বাজারের টাকা পরিশোধ করতেন স্কুল ফান্ড থেকে । একই কাজ এর আগে বরিশাল জিলা স্কুলে থাকাকালীন সময়েও করেছেন এই শিক্ষক । বরিশাল জিলা স্কুল ফান্ডের টাকায় কেনা টেলিভিশন নুরুল ইসলামের বাসায় এখনও আছে । এরকম একজন দুর্নীতিগ্রস্ত শিক্ষক কিভাবে ঐতিহ্যবাহী বরিশাল জিলা স্কুলে আবারও প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করলেন এটাই সচেতন মহলের প্রশ্ন । বরিশাল জিলা স্কুল সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসের ৯ তারিখ যোগদান করেন নুরুল ইসলাম । তার যোগদান উপলক্ষে সকল ক্লাশ বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীদের তিন ঘন্টা রোদে দাঁড় করিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান করা হয় । সেই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয় । এসব বিষয়ে জানতে শিক্ষক নুরুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি তিনি । এরপর খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তার কোনো জবাব দেননি বিতর্কিত এই শিক্ষক । সচেতন মহলের মতে, নুরুল ইসলামের দুর্নীতির বিষয়গুলো দ্রুত তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত, যাতে ভবিষ্যতে এমন অনিয়ম আর না ঘটে।