বরগুনায় আবারও ডেঙ্গুর ভয়াবহতা: ১২ ঘণ্টায় পাথরঘাটায় ৪ জনের মৃত্যু

বরগুনার পাথরঘাটায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। মাত্র ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) রাখাল বিশ্বাস অপূর্ব।
ডেঙ্গুতে মৃতরা হলো—কালমেঘা ইউনিয়নের ঘুটাবাছা এলাকার সুজন ঢালীর মেয়ে শুক্লা ঢালী (১৩), আমড়াতলা এলাকার সেলিম মিয়ার ছেলে হাসান (২৫), কাকচিড়া ইউনিয়নের হরিদ্রা এলাকার নাসির মোল্লার ছেলে সিদ্দিক মোল্লা (৪৫) এবং পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের রুহিত এলাকার আব্দুর রশিদ মোল্লার স্ত্রী নুরজাহান বেগম (৭৫)। এদের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, অপরজনের মৃত্যু হয়েছে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে পাথরঘাটা ও আশপাশের এলাকায় টানা মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি থেমে রোদ উঠতেই হঠাৎ ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। প্রতিদিনই অসংখ্য রোগী জ্বরের লক্ষণ নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হচ্ছে।
বরগুনার সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বরগুনা জেলায় নতুন ভর্তি হয়েছে ৪৫ জন। এর মধ্যে বরগুনা সদর হাসপাতালে ২৩ জন, বেতাগীতে ৭ জন, বামনায় ৫ জন, পাথরঘাটায় ৯ ও তালতলীতে ১ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে।
পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রাখাল বিশ্বাস অপূর্ব বলেন, ‘বৃষ্টি কমার পর থেকেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। হাসপাতালে প্রতিনিয়ত নতুন রোগী আসছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি চিকিৎসা দিতে, কিন্তু রোগীর চাপ এতটাই বেশি যে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।’
এদিকে, হঠাৎ ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় পাথরঘাটা উপজেলাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারি হিসাবে পাথরঘাটায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৫৮৬ হলেও বাস্তবে কয়েক গুণ বেশি। অপরদিকে হাসপাতাল ও আশপাশের এলাকায় রোগীদের ভিড় দিনে দিনে বাড়তে থাকায় চিকিৎসক ও স্বজনদের মধ্যে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, দ্রুত মশা নিধন কার্যক্রম ও জনসচেতনতামূলক উদ্যোগ না নিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।