সাবেক ছাত্রলীগ নেতার লাশ উদ্ধার, পরিবারের দাবি খুন, পুলিশ বলছে দুর্ঘটনা

নিজেস্ব প্রতিবেদক | ২০:৫৬, সেপ্টেম্বর ১৬ ২০২৫ মিনিট

ভোলা উপজেলা সদরে ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফের বাসার সামনে থেকে রক্তাক্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানিয়েছে নিহতের পরিবার। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান নিহত আরিফের বাবা বশির উদ্দিন মাস্টার। সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, ‘পুলিশ ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে দুর্ঘটনা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।’ তিনি আরও বলেন, গত ৩০ আগস্ট ভোরে ফজরের নামাজ পড়তে বের হওয়ার সময় বাড়ির সামনে আরিফের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ সময় তাঁর কপাল ভাঙা, মুখ ক্ষতবিক্ষত ও হাতের কবজি ভাঙা অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বশির মাস্টার বলেন, ‘ঘটনার দুই সপ্তাহ পার হলেও পরিবারের হাতে এজাহারের কপি ও পোস্টমর্টেম রিপোর্ট দেওয়া হয়নি। বরং পুলিশ আরিফকে মাদকাসক্ত বলে অভিযোগ করেছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক।’ আরিফ কখনো মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিল না দাবি করে বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশের তদন্তে অসংগতি ও সত্য গোপনের চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি মামলাটি পিবিআই বা সিআইডির কাছে হস্তান্তর করে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশ সুপারের কাছে দাবি জানান। এর আগে ১৩ সেপ্টেম্বর শনিবার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, গত ৩০ আগস্ট ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফের বাসার সামনে রক্তাক্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশের তদন্ত চলমান। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছে, কোনো দুষ্কৃতকারী তাঁকে হত্যা করেছিল। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলাও হয়েছে। কিন্তু সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোরবেলা ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দিন বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান। পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে পুলিশ সুপার শরীফুল হক বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’