হানিট্র্যাপের শিকার মির্জাগঞ্জের আশ্রাফ হাওলাদার, ১ নারী গ্রেপ্তার

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২১:১৮, সেপ্টেম্বর ১৫ ২০২৫ মিনিট

এবার হানিট্র্যাপের শিকার হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আশরাফ আলী হাওলাদার। কুয়াকাটা পৌর এলাকার ফারজানা বেগম (২৪) নামের এক নারীর নেতৃত্বে হানিট্র্যাপের শিকার হয়ে মির্জাগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন আশ্রাফ আলী হাওলাদার। রিমা (১৮) নামের অপর এক নারী সহ আরো ৪জনকে অজ্ঞাত নামা আসামি করা হয় এই মামলায়। মামলার রেশ ধরে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোর ৪টার দিকে এজাহারভুক্ত আসামি ফারজানা বেগমকে কুয়াকাটা শাহীন মাস্টারের ভাড়া বাড়ি থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। মহীপুর থানাধীন কুয়াকাটার ৯নং ওয়ার্ডের মৃত হাতেম দফাদারের কন্যা এবং মোঃ শাহিন হোসেনের স্ত্রী এই ফারজানা বেগম। এজাহার সূত্রে জানা যায়, দুইটি মোবাইল নাম্বার দিয়ে অপরিচিত মহিলা কন্ঠে আশ্রাফ হাওলাদারকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করা হতো। তিনি বাঁধা দিলেও শুনতেনা। গত বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) তাঁর নিজের মালিকাধীন গ্রীন পার্ক থেকে মোটরসাইকেল যোগে দুপুরে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথিমধ্যে ৪-৫ জন বোরকা পরিহিত মহিলা তাঁর পথরোধ করে তাঁরা কলেজ শিক্ষার্থী পরিচয় দেয় এবং তাদের শিক্ষা সফর ও বিভিন্ন শিক্ষা সরঞ্জাম ক্রয় করার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা প্রয়োজন বলে জানান। এত টাকা চাঁদা দিতে তিনি অসম্মতি জ্ঞাপন করলে ,ঐ নারীরা তাকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেয় এবং তাকে টেনে হেঁচড়ে বিবস্ত্র করার চেষ্টা করে। এঅবস্থায় তাদের হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে ভিডিও ধারণ করতে থাকে। আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার তৈরি করা তাঁর নগ্ন ভিডিও  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিবে বলে ঐ নারীরা ভয়-ভীতি দেখায় এবং চাঁদা দাবি করে। এর ধারাবাহিকতায় তিনি বিকাশের মাধ্যমে ওই নারীদের টাকা পাঠান। দুইদিন পরে অর্থাৎ শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) মির্জাগঞ্জ থানা সংলগ্ন কপালভেড়া স্টীল ব্রীজের পশ্চিম পাশে পৌঁছলে ফারজানা ও রিমা সহ অজ্ঞাতনামা একজন জন নারী ও দুইজন পুরুষ আশ্রাফ হাওলাদারের মােটরসাইকেল রোধ করে। দাবিকৃত টাকা কেন পাঠানো হয়নি বলে তাকে বিবস্ত্র করার ভয় দেখিয়ে ব্লাকমেইল করে তাৎক্ষণিক একলাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়,সুগার ড্যাডি বানিয়ে আশ্রাফ হাওলাদারের নিকট থেকে হাতিয়ে নেওয়া পাঁচ হাজার টাকা, ফাঁদ তৈরির ফেসবুক মেসেঞ্জার ব্যবহারকৃত ইনফিনিক্স এক্স ৬৮৮০ মডেলের একটি মোবাইল এবং দুইটি সীম উদ্ধার করা হয় গ্রেফতারকৃত আসামি ফারজানা বেগমের নিকট থেকে। এছাড়াও ট্র্যাপে ফেলে চাঁদা দাবির বিভিন্ন তথ্য প্রমান মোবাইল থেকে জব্দ করা হয়েছে। পুলিশ জানায়,আসামিরা হানিট্রাপের মাধ্যমে বয়স্ক বৃদ্ধ লোকদের সুগার ড্যাডি বানিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নজরুল ইসলাম মৃধা জানান,বয়স্ক বিত্তবানদের টার্গেট করে হানি ট্র্যাপে ফেলে অর্থ আত্মসাৎ করাই তাদের কাজ। এই গ্রুপের প্রধানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদেরও গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে।