অতিরিক্ত শাসন করায় ভোলায় ছেলের হাতেই খুন হন মাওলানা নোমানী

নিজেস্ব প্রতিবেদক | ২০:৪৪, সেপ্টেম্বর ১৪ ২০২৫ মিনিট

ভোলার বহুল আলোচিত ইসলামি বক্তা  মাওলানা আমিনুল হক নোমানী হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। নোমানীর বড় ছেলে ১৭ বছর তিন মাস বয়সী রেদোয়ান ছুরিকাঘাতে বাবাকে হত্যা করে বলে পুলিশ জানিয়েছে। শনিবার বিকাল ৪টায় ভোলা পুলিশ সুপার এর কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিং এ  এতথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার শরিফুল হক।  পুলিশ সুপার জানান, পিতার কঠোর শাসনে অতিষ্ঠ হয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন ধরণের মুভি দেখে রেদোয়ান পিতাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এজন্য সে অনলাইনের মাধ্যমে একটি ছুরি আনে এবং সেই ছুরি দিয়েই একাই নিজ ঘরে বাবাকে হত্যা করে। পুলিশ  জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে নিহত মাওলানা আমিনুল হক নোমানীর ছেলে রেদেয়ানুল হক তার পিতাকে হত্যার কথা অকপটে স্বীকার করে। রেদোয়ানের দেখানো মতে ভিকটিমের বাসার পিছনে খালের মধ্য থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করে পুলিশ । পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, খুন হওয়া মাওলানা নোমানী খুব মেধাবী ছিলেন। তার ছেলে রেদোয়ানও অত্যন্ত মেধাবী। কিন্তু বাবা তার ছেলেকে খুব কড়া শাসন করতেন। এ থেকেই ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এ নিয়ে দুবার ছেলে আত্মহত্যা করতে চেয়েছেন এবং বাবাকে হত্যারও পরিকল্পনা করেন। বাবা-ছেলের এ কলহের কারণে ছেলে গত ২ মাস ধরে তজুমদ্দিন উপজেলায় তার মামা বাড়ি থাকতেন। এসপি বলেন, গত ৫ সেপ্টেম্বর তার মা তার নানাবাড়ি বেড়াতে গেলে রেদওয়ান দারাজ থেকে অর্ডার দিয়ে একটি ধারালো চাকু নিয়ে আসে। সবশেষে ঘটনার দিন রেদওয়ান তজুমদ্দিন তার মামাবাড়ি থেকে ধারালো চাকুসহ ভোলায় নিজবাড়ির পেছনে এসে লুকিয়ে থাকেন। তার বাবা এশার নামাজ পড়ে বাসায় ফিরে কম্পিউটারে কাজ করছিলেন। এ সময় বাবাকে দরজা খুলতে বললে তিনি দরজা খুলে দেন। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গেই চাকু দিয়ে তার বাবাকে আঘাত করে। মাওলানা নোমানীকে হত্যা করে ঘরের পেছন দিয়ে পালিয়ে যায় ছেলে। শরিফুল হক বলেন, অবশেষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তিনটি গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তের পর হত্যার দায়ে নিজ ছেলে রেদোয়ানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ভোলার সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের চরনোয়াবাদ এলাকায় মাওলানা আমিনুল ইসলাম নোমানীকে তার নিজ ঘরে কুপিয়ে শনিবার ৬ সেপ্টেম্বর রাত সোয়া ৯টার দিকে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।