মেয়রের অনুরোধ না রাখায় করোনা আতঙ্কে বরিশালবাসী

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২২:১৫, মে ১৯ ২০২০ মিনিট

এসএন পলাশ ॥ মেয়রের অনুরোধ অমান্য করে ব্যবসায়ীরা গত ১০ মে থেকে সকল দোকানপাট খোলা রাখায় করোনা আতঙ্কে গোটা বরিশালবাসী। সাথে ছিল প্রশাসনের ঢিলেঢালা ভাব। উল্লেখ্য, গত ৯ মে রাতে বিসিসি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ নগরীর চকবাজার ব্যবসায়ী মালিক কল্যাণ সমিতির নেতৃবৃন্দদের নিয়ে আয়োজিত এক বৈঠকে করোনার প্রভাব রুখতে ঈদ পর্যন্ত দোকান বন্ধ রাখার আহবান জানিয়েছিলেন। মেয়রের অনুরোধ রাখবে বলে কথা দিয়েছিলেন ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দরা। কিন্তু তারা রাখলেন না। নগরীর অলিগলি থেকে প্রাণকেন্দ্রে দোকান খোলা রাখতে দেখা গেছে ব্যবসায়ীদের। এসময় ক্রেতা-বিক্রেতাদের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করাসহ যে নিয়ম মেনে চলতে বলা হয়েছে তা বিন্দুমাত্র লক্ষ্য করা যায়নি। স্বাস্থ্য বিধির কিছুই মানেনি ক্রেতা-বিক্রেতারা। এমনকি শিশু এবং বয়স্কদেরও ঈদের কেনাকাটায় নিয়ে আসছেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি উপেক্ষিত হওয়ায় করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় ১৯ মে ফের বরিশাল জেলার সকল দোকান-পাট পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ করার ঘোষনা দেয় জেলা প্রশাসন। মাত্র ৯ দিনের জন্য খোলা হয়েছিল সকল ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান। যেখানে লকডাউনের মধ্যেও বরিশালসহ সারাদেশে প্রতিদিনই করোনায় মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুততার সঙ্গে বেড়েই চলেছে। সেখানে মাত্র ৯ দিনের জন্য সকল দোকান-মার্কেট খুলে দিয়ে নিরাপদ দূরত্ব বজায় না রেখে ভিড় করে কেনাকাটা করাটা ছিল আত্মঘাতী। তাহলে প্রশাসন কেন মেয়রের কথার সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে সকল দোকান-মার্কেট বন্ধ করার ঘোষনা দিলনা। এর দায় কে নিবে? প্রশাসন নাকি ব্যবসায়ীরা? হয়তো প্রশাসন বলবে শপিং-মল ও দোকান-পাট খোলার সিদ্ধান্ত এসেছিল সরকারের পক্ষ থেকে সেখানে আমাদের করনীয় ছিল সরকারের কাজের সমন্বয় সাধন করা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে শপিং-মল ও দোকান-পাট খোলার কথা যখন উপেক্ষিত হয়েছে তখন ২/১ দিনের মধ্যে সকল দোকান-পাট বন্ধ করতে তৎপর হলে জেলা প্রশাসনের ‘নৈতিকতা’ প্রতিষ্ঠার প্রয়াস দৃশ্যমান হতো। তাহলে হয়তো ভেস্তে যেত না বরিশালে করোনা ভাইরাস সংক্রমণরোধে প্রশাসনের নেয়া সকল পদক্ষেপ। গত ৯ দিনে পুরো বরিশাল জুড়ে বেড়ে গেছে করোনার আতঙ্ক। এখন প্রতিদিনই নগরীতে ৪/৫ জন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। আর জেলা জুড়ে ক্রমশ বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। অপরদিকে ঈদের দু-এক দিন আগে কড়াকড়ি হবে জেনে অনেকেই আগেই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। এক জেলা থেকে আরেক জেলায় যাওয়ার জন্য কোনো ধরনের গণপরিবহন না থাকলেও কোনো না কোনো উপায়ে ঠিকই পরিবারের কাছে ফেরার পথ খুঁজছে মানুষ। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ঈদ সামনে রেখে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা থেমে নেই। সচেতন মহলের দাবী, এ মুহূর্তে বরিশালকে সকল জেলা থেকে বিচ্ছিন্ন করা এবং লকডাউন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা জরুরি। তা না হলে বড় ধরনের সর্বনাশ হয়ে যেতে পারে। করোনাভাইরাস সারা বরিশালে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়বে।