নিজস্ব প্রতিবেদক : দাবি পূরণে উপাচার্যের লিখিত আশ্বাস পাওয়ার পর গণ-অনশন ভেঙেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচি শুরুর পর প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জুস পান করিয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তৌফিক আলম ।
শিক্ষার্থী গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুজয় শুভ বলেন, “উপাচার্য লিখিতভাবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন রোডম্যাপ দিয়েছেন। তিার আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে। অসুস্থ শিক্ষার্থীরা এখন সুস্থ রয়েছেন।”
উপাচার্যের সই করা রোডম্যাপ চারটি দাবি পূরণ করার কথা বলা হয়েছে। সেগুলো হলো-
১. উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) নিয়োগ দিয়ে তার পর থেকে ছয় মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ করা।
২. আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে বিভিন্ন রুটে শিক্ষার্থীদের বাসের সিটের চাহিদা নির্ধারণ করে বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করা।
৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আরেকটি অ্যাম্বুলেন্স কেনার জন্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ছাড়পত্র পেতে আগামী রোববারের মধ্যে আবেদন জমা দেওয়া।
৪. ক্যাম্পাসের আয়তন আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে জমির পনর্মূল্যায়ন করা।
এসব দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার সাড়ে ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের নিচতলায় আমরণ অনশনে বসেন সাত শিক্ষার্থী।
তারা হলেন– ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শর্মিলা জামান সেঁজুতি, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অমিয় মণ্ডল, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের তাজুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের আবু বকর সিদ্দিক, দর্শন বিভাগের পিয়াল হাসান, লোকপ্রশাসনের তামিম আহমেদ রিয়াজ ও আইন বিভাগের শওকত ওসমান স্বাক্ষর।
বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে তাদের দাবি পূরণে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা বলে অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেন উপাচার্য মোহাম্মদ তৌফিক আলম। কিন্তু শিক্ষার্থীরা ইউজিসি ও মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন না পাওয়া পর্যন্ত অনশন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।
রাত ১টার দিকে উপাচার্য অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের পাশে মশারি টানিয়ে শুয়ে পড়েন। সকাল ৯টা পর্যন্ত তিনি সেখানে ছিলেন। শুক্রবার দুপুরে অনশন করা শিক্ষার্থী শর্মিলা জামান সেঁজুতি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তাকে সেখানেই স্যালাইন দেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, শুক্রবার রাতে উপাচার্য তৌফিক আলম ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন রোডম্যাপ’ নিয়ে অনশনস্থলে আসেন। শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের সব রকমের উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু অনশনকারীরা ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের লিখিত ছাড়া অনশন ভাঙতে রাজি হচ্ছিলেন না।
এক পর্যায়ে উপাচার্য অনশনকারীদের হাতজোড় করে অনশন ভাঙার অনুরোধ করলে শিক্ষার্থীরা রাজি হন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর রাহাত হোসাইন ফয়সাল বলেন, আমাদের যে কর্মপরিকল্পনা রয়েছে। সেগুলো ড্রাফট আকারে শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মহোদয়ের আশ্বাসে অনশন ভঙ্গ করেছেন। অনশনে থাকা শিক্ষার্থীরা সুস্থ রয়েছেন।”