ভবন সওজের জমিতে, হবে বিএনপি কার্যালয়

নিজেস্ব প্রতিবেদক | ২১:২৬, সেপ্টেম্বর ০৪ ২০২৫ মিনিট

বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) জমি দখল করে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ওই স্থানে গত বছরের ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের নেতারা ছাপরা তুলে কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করতেন বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।

প্রায় দুই মাস ধরে শ্রমিক দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দুই কক্ষের ভবনের নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, দুই মাস ধরে সড়কের জমি দখল করে ভবন নির্মাণের কাজ চললেও সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বরিশাল-বানারীপাড়ার সড়কে সবচেয়ে ব্যস্ততম গুঠিয়া সেতু। এটি ওই এলাকার বাণিজ্যিক বন্দর এবং গুঠিয়ার সন্দেশ প্রসিদ্ধ হওয়ায় সব সময় জমজমাট থাকে। বরিশাল থেকে বানারীপাড়া যেতে সেতু পার হওয়ার পর ঢালের শুরুতে দক্ষিণ পাশে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ভবন নির্মাণ করেছেন।

গতকাল বুধবার সড়ক ও জনপথ বিভাগের উজিরপুর উপজেলার উপসহকারী প্রকৌশলী হামিদুর রহমান বলেন, ‘আমি খবর পেয়ে আজ (বুধবার) নির্মাণাধীন ওই ভবন দেখে এসেছি। ভবনে ওঠার জন্য একটি সিঁড়িও করা হয়েছে। ওই ভবন এবং সিঁড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমির ওপর করা হয়েছে কি না, তা সার্ভেয়ার এনে মেপে দেখতে হবে।’

অপর দিকে স্থানীয় বিএনপির নেতারা বলছেন, সরকারের প্রয়োজন হলে তাঁরা জমি ছেড়ে দেবেন।

জানা গেছে, একই স্থানে ২০২৩ সালের দিকে অবৈধভাবে টিনের ছাপরা তুলে গুঠিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয় করা হয়েছিল। গত বছর ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন অফিসটিতে লুটপাট করে আগুন দেওয়া হয়।

গুঠিয়ার একজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সেতুর ঢাল যেখানে শুরু হয়েছে, সেখান থেকে আনুমানিক ৫ ফুট দূরত্বে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। দুটি লম্বা কক্ষ করা যাবে, এমন আকারের ভবনটি করা হয়। নিচু জায়গায় এরই মধ্যে পিলারের ওপর দাঁড় করানো ভবনে গাঁথুনি ও ছাদের ঢালাই শেষ হয়েছে। প্রকাশ্যে সড়কের জমি দখল করে ভবন করা হলো, কিন্তু সরকারি সংস্থাটির কারও নজরে পড়েনি, এটি বিশ্বাসযোগ্য নয়।’

গুঠিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও উজিরপুর উপজেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক শাহিন হাওলাদার বলেন, ‘খালি জমি পড়ে আছে, ভবন করেছি। সরকারের যদি কোনো দিন প্রয়োজন হয় ছেড়ে দেব। তবে সেখানে আগে আওয়ামী লীগের কার্যালয় ছিল না।’

সেতুর ঢাল ঝুঁকিপূর্ণ স্থান এবং সরকারি জমিতে পাকা ভবন নির্মাণ ঠিক কি না, এ প্রসঙ্গে শাহিন বলেন, ‘ঢাকায় সরকারি জমিতে অনেক দলের অফিস হয়েছে, তাতে হয়েছে কী?’

উজিরপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন খান বলেন, ‘পোলাপানে কার্যালয় করতে

পারে। তারা অবশ্য বিষয়টি থানা বিএনপিকে জানায়নি। এ জন্য সঠিক বলতে পারব না।’

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘গুঠিয়া ব্রিজসংলগ্ন সড়ক ও জনপথের জমিতে ভবন করা হচ্ছে কি না, তা আমার জানা নেই। আমাকে কেউ জানাননি। সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।