নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডস্থ হরিনাফুলিয়া এলাকায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হযরত বায়জিদ বোসতামি (রঃ) এতিমখানা ও মাদ্রাসা এবং হযরত শেখ ফরিদ (রঃ) জামে মসজিদের নামে দানকৃত প্রায় ১০ একর ৪৬ শতাংশ জমি আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জনৈক পরিমল কুমার রায়েল সহধর্মিনি বাসন্তী রানী রায় ধর্মীয় অনুভূতিতে অনুপ্রাণিত হয়ে ২০১৪ সালে দুটি রেজিস্ট্রি দলিলের মাধ্যমে এসব জমি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে দান করে। তখন মুতওয়াল্লি ছিলেন প্রবীণ ব্যক্তি আব্দুল মন্নান সন্যামত রুপাই, যিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য নানা উদ্যোগ নেন।
অভিযোগ রয়েছে, তার বার্ধক্যের সুযোগ নিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি মোঃ হুমায়ুন কবির হাওলাদার ও তার সহযোগীরা প্রথমে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের অজুহাতে ২০২০ সালে একটি রেজিস্ট্রি দলিলের মাধ্যমে ১ একর ৮১ শতাংশ জমি বিক্রি করে ৩ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা গ্রহণ করেন। তবে সেই অর্থ দিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে না তুলে বরং বিভিন্ন জায়গায় জমি ও সম্পদ কিনে নিজস্ব বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ করেন বলে জানা গেছে।
এরপর ২০২১ সালের ৮ জুন আরও তিনটি দলিলের মাধ্যমে প্রায় ৪৬ শতাংশ ২০২৪ সালের আরও ৩ টি দলিলের মাধ্যমে ৬ একর ৯৬ শতাংশ জমি বিক্রির মাধ্যমে উপরক্ত জমিসহ প্রায় ১৮-২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন সাবেক কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির। অভিযোগ রয়েছে, এসব জমি বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে বিক্রয় দেখানো হয়েছে। অথচ মসজিদ বা এতিমখানার কোনো কাঠামো এখনো গড়ে ওঠেনি
স্থানীয়রা জানান, সাবেক কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির বর্তমানে ঢাকায় বিলাসবহুল বাড়ির মালিক, বরিশালের জাগুয়া এলাকায়ও রয়েছে তার ব্যয়বহুল সম্পত্তি। এমনকি তার টাকায় মেয়ে ঢাকায় গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠা করেছেন। আওয়ামী আমলে কাউন্সিলর হয়ে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে শতকোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
আরো জানা যায়, আওয়ামী লীগের ক্ষমতা বলে সাবেক কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিনের কালিজিরা বাজারের দোকান ঘর রাতের অন্ধকারে ভেঙ্গে অবৈধ ভাবে দখল করে নেন। হুমায়ুন কবির ফ্যাসিস্টের দোসর হয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে কালিজিরা এলাকায় ছাত্রদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলো। ৫ আগস্টের পর কিছুদিন পালিয়ে বেড়ালেও সম্প্রতি প্রকাশ্যে ঘুরে বেরাচ্ছেন পাঁচ মামলার আসামী হুমায়ুন কবির।
তবে আওয়ামী লীগ নেতা হুমায়ুন কবির দাম্ভিকতা প্রকাশ করে বলেন, মসজিদের জমি দখল করছি তাতে আপনাদের (সাংবাদিক) কি। সংবাদ প্রকাশ করলে আমার কিছুই হবে না।
তবে স্থানীয়দের দাবি, অবিলম্বে আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট এর দোসর ভূমিদস্যু হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হোক যেন এতিমখানা ও মসজিদ প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়।