ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিলেন কোতয়ালী মডেল থানার দুই ওসি!

এ.এ.এম হৃদয় | ১৮:৪২, জুলাই ২০ ২০২৫ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিকাশ ব্যবসায়ীকে থানায় আটকে রেখে চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগ তুলে বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালী মডেল থানার দুই ওসি, একজন এসআই ও দুইজন কনস্টেবলের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মাইনুল ইসলাম স্বপন নামের এক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। রবিবার (২০ জুলাই) সকাল ১১টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাইনুল ইসলাম স্বপন বলেন, তিনি নগরীর বাংলা বাজার মোড়ের একজন বিকাশ ব্যবসায়ী। বরিশাল মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে কর্মরত কনস্টেবল রাশেদের সাথে সু-সম্পর্ক থাকায় তার কাছ থেকে ব্যবসার প্রয়োজনে মাসে ২১ হাজার টাকা লাভের বিনিময়ে ২০২৩ সালের ২ মার্চ ৭ লাখ টাকা ধার নেয়। ধারের টাকার জামানত হিসেবে একটি ব্লাংক চেক ও ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয় কনস্টেবল রাশেদ। লাভের টাকার পাশাপাশি ধারের টাকা পরিশোধ করে দেয় ব্যবসায়ী স্বপন। এক পর্যায়ে তার ধার ও লাভের টাকা পরিশোধ হয়ে যায়। কিন্তু টাকা পরিশোধ হয়ে গেলেও জামানত হিসেবে রাখা চেক ও স্ট্যাম্প ফেরত দেয়নি রাশেদ। ডকুমেন্টস ফেরত না দিয়ে উল্টো স্বপনের কাছে আরও ৪ লাখ টাকা দাবী করেন তিনি। টাকা না দিলে মামলার ভয় দেখান কনস্টেবল রাশেদ। ব্যবসায়ী স্বপন ৪ লাখ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কনস্টেবল রাশেদের স্ত্রী ফারজানা বেগমকে বাদী করে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় স্বপনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন। লিখিত বক্তব্যে স্বপন আরো বলেন, অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রুহুল আমিন বিষয়টি সমঝোতার জন্য স্বপনকে থানায় ডাকলে গত ১৮ জুলাই (শুক্রবার) সকাল সাড়ে ১১ টায় থানায় যান তিনি। থানায় যাওয়ার সাথে সাথে কোন কিছু জিজ্ঞাসা না করেই তার কাছ থেকে মোবাইল, মানিব্যাগসহ যাবতীয় সব কিছু রেখে একটি রুমে আটকে রাখে। এরপর তার সাথে অমানবিক আচরণ শুরু করেন থানার ওসি (অপরেশন) গাজী মিজানুর রহমান। তার উপরে চাপ প্রয়োগ করেন এবং মামলা দিয়ে আদালতে চালান দেয়ার হুমকি প্রদান করেন। এক পর্যায়ে স্বপনের বৃদ্ধ মাকে থানায় ডেকে একই ধরনের হুমকি প্রদান করেন তারা। স্বপনের মা অসহায় হয়ে পড়েন। তাকেও মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে তার মায়ের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকার চেক ও ব্লাংক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয় তারা এবং তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই রুহুল আমিন নিজে চেক লিখে তার মায়ের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয়। স্বপ্ন আরো বলেন, রাশেদের চাচাতো ভাই কোতয়ালী মডেল থানার এসি অফিসে কর্মরত কনস্টেবল হুমায়ুন তার মোটরবাইকে করে তার দোকান নিয়ে কনস্টেবল রাশেদকে ধারের ৭ লাখ টাকা পরিশোধের সকল ডকুমেন্টস চাপ প্রয়োগ করে নিয়ে যায়। এদিকে স্বপনের মোবাইলে থাকা টাকা পরিশোধের সকল ডকুমেন্টস এসআই রুহুল আমিন নিজ হাতে ডিলিট করে দেন। এদিকে কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান ও ওসি তদন্ত গাজী মিজানুর রহমান থানায় ৬ ঘন্টা স্বপনকে আটকে রেখে পুলিশ সদস্য রাশেদের পক্ষ নিয়ে তার কাছ থেকে সকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস রেখে ছেড়ে দেয়। তাদের দাবীকৃত টাকা পরিশোধ না করলে মামলার হুমকি দেন। পাশাপাশি এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করতেও নিষেধ করেন। স্বপনের সাথে ঘটা অমানবিক আচরণের সুষ্ঠু বিচার পেতে বরিশাল মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনারসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। বিষয়টি জানতে কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি তা রিসিভ করেননি।