আওয়ামী সরকার পতনের পর বিলবোর্ডে আয় বেড়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২২:৫২, জুলাই ১৫ ২০২৫ মিনিট

দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর বিলবোর্ডের বিজ্ঞাপন থেকে উল্লেখযোগ্য হারে আয় বৃদ্ধি পেয়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি)। আওয়ামী সরকারের আমলে বিলবোর্ড থেকে বিজ্ঞাপন বাবদ আয় বঞ্চিত ছিল করপোরেশন। কারণ তৎকালীন আওয়ামী নেতাকর্মীরা নগরী জুড়ে সাঁটানো বিলবোর্ডে তাদের নেতাদের ছবি দিয়ে ব্যানার টাঙিয়ে রাখতেন। বছরের পর বছর সেসব ব্যানার ঝুলে থাকতো। ফলে সেসব বিলবোর্ড থেকে কোনো ধরনের রাজস্ব পেতো না সিটি করপোরেশন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সেই প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে। শুধু বিলবোর্ডের বিজ্ঞাপন বাবদই বছরে প্রায় কোটি টাকার কাছাকাছি রাজস্ব আদায় হয়েছে। এছাড়া তৎকালীন আওয়ামী লীগ আমলের সোয়া কোটি টাকার বিল এখনো বকেয়া রয়েছে। ‘এসব বকেয়া টাকা উত্তোলন করা দরকার। এজন্য সিটি করপোরেশনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। যাদের কাছে বকেয়া টাকা পাওয়া রয়েছে প্রয়োজনে তাদের মালামাল ক্রোক করতে হবে।’ বিসিসি সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল নগরীতে সিটি করপোরেশনের আওতাধীন প্রায় একশ বিলবোর্ড রয়েছে। এসব বিলবোর্ডে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিয়ে করপোরেশন মোটা অঙ্কের একটা রাজস্ব আদায় করতো। কিন্তু তৎকালীন আওয়ামীপন্থি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ও আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের অনুসারী নেতাকর্মীরা সেসব বিলবোর্ড বছর জুড়ে নিজেদের ব্যানার সাঁটিয়ে দখল করে রাখতেন। বিসিসির বিজ্ঞাপন শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহাবুব হোসেন বাদল বলেন, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বিলবোর্ডের বিজ্ঞাপন বাবদ করপোরেশনের আয় হয় ৬৭ লাখ টাকা, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে আয় হয় ৭২ লাখ টাকা আর ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে আয় হয়েছে ৬৯ লাখ টাকা। তবে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের আরও ৫-৭ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে, যা কিছু দিনের মধ্যেই উঠে যাবে। সে হিসাবে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বিলবোর্ড থেকে আয় বেড়ে দাঁড়াবে ৭৫ থেকে ৭৬ লাখ টাকা। ‘সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় বর্তমানে অনুমোদিত ও অননুমোদিত বিলবোর্ডের তালিকা তৈরি করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এই আয়ের পরিমাণ আরও অনেক বেশি হতে পারত যদি বকেয়া আদায় নিশ্চিত করা যেত। বর্তমানে বিলবোর্ড বাবদ মোট বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা।’ তিনি আরও জানান, সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় বর্তমানে অনুমোদিত ও অননুমোদিত বিলবোর্ডের তালিকা তৈরি করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এই আয়ের পরিমাণ আরও অনেক বেশি হতে পারত যদি বকেয়া আদায় নিশ্চিত করা যেত। বর্তমানে বিলবোর্ড বাবদ মোট বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। বরিশাল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এবায়দুল হক চাঁন বলেন, আওয়ামী লীগের দোসররা নিজেদের ক্ষমতাবলে সিটি করপোরেশনের রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। এখন এসব বকেয়া টাকা উত্তোলন করা দরকার। এজন্য সিটি করপোরেশনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। যাদের কাছে বকেয়া টাকা পাওয়া রয়েছে প্রয়োজনে তাদের মালামাল ক্রোক করতে হবে। এছাড়া নগরীর সৌন্দর্য রক্ষা ও সুষ্ঠু রাজস্ব ব্যবস্থাপনার জন্য নগরবাসীকে সহযোগিতা করতে হবে সিটি করপোরেশনকে। ‘বিলবোর্ড মালিকদের অনেকেই বছরের পর বছর ফি পরিশোধ না করায় এই বকেয়া জমেছে। তবে ২০২৫ সাল থেকে বিজ্ঞাপন শাখায় তদারকি ও নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।’ বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী বলেন, বিলবোর্ড মালিকদের অনেকেই বছরের পর বছর ফি পরিশোধ না করায় এই বকেয়া জমেছে। তবে ২০২৫ সাল থেকে বিজ্ঞাপন শাখায় তদারকি ও নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। লাইসেন্স নবায়নের কড়াকড়ি আরোপ, অননুমোদিত বিলবোর্ড অপসারণ ও নতুন ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতির ফলে আয় বৃদ্ধির এই ধারা এসেছে।