ফের বেপরোয়া উজিরপুরের মাদক বিক্রেতা রিপন

নিজেস্ব প্রতিবেদক | ২১:৪৪, জুলাই ০৭ ২০২৫ মিনিট

বরিশালের উজিরপুরের জল্লা ইউনিয়নে ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা রিপন মোল্লা (৪০) ওরফে চোরা রিপন। সে ওই ইউপির বাহেরঘাট গ্রামের জোড়া ব্রীজ সংলগ্ন মোল্লাবাড়ির মৃত. মালেক মোল্লার ছেলে। উজিরপুরসহ আশপাশের থানাগুলোতে তার বিরুদ্ধে মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে। মাদক মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলও খেটেছেন অনেকবার। জানা গেছে, মাদকবিরোধী অভিযানে চলতি বছরের ২২ এপ্রিল র‌্যাবের গুলিতে নিহত হয়েছে মাদক ব্যবসায়ী রিপনের ছেলে কলেজছাত্র সিয়াম মোল্লা (১৭)। নিহত সিয়াম কোনো মাদকের সাথে জড়িত ছিলো না। কিন্তু তার মাদক ব্যবসায়ী বাবা রিপনের কারণে নিহতের পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কিশোর সিয়ামকে মাদক ব্যবসায়ী তকমা লাগিয়েছিলো। তবে এলাকাবাসী তার প্রতিবাদ জানিয়ে সিয়াম নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধনও করেছিলো। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রিপন অনেক বছর ধরে এলাকায় গাঁজা, ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য বিক্রি করে আসছে। স্থানীয় রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্রচ্ছায়ায় এই ব্যবসা করে আসছিলো। চলতি বছরের এপ্রিলে রিপনের কলেজ পড়ুয়া ছেলে সিয়াম মোল্লা র‌্যাবের গুলিতে নিহত হওয়ার পরে কিছুদিন রিপনের মাদক ব্যবসা বন্ধ ছিলো। সম্প্রতি আগের চেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাদক বিক্রেতা রিপন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রিপন প্রায় দীর্ঘ ১০ বছর ধরে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। এর আগে এলাকায় বেশ কয়েকবার চুরি করে গ্রামবাসীর হাতে ধরা পড়েছিলো। যার কারণে নিজ এলাকায় চোরা রিপন নামে বেশি পরিচিত মাদক বিক্রেতা রিপন মোল্লা। উজিরপুর মডেল থানা পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা রিপন মোল্লার বিরুদ্ধে মাদক মামলায় আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। পুলিশ রিপনকে গ্রেফতারে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নটি পাশ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী। আর রিপনের বসতবাড়ি দুই উপজেলার সীমান্ত বাহেরঘাট গ্রামের জোড়া ব্রীজ সংলগ্ন মোল্লাবাড়ি। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মাদক বিক্রেতা রিপন দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোকে মাদকের অভয়ারন্য বানিয়ে ফেলেছে। এসব এলাকার বয়স্ক থেকে শুরু করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। মাদক কারবারি রিপনের কয়েকজন প্রতিবেশি জানিয়েছেন, রিপন অনেক আগে থেকেই মাদকাসক্ত ছিলেন। এছাড়া স্ত্রীর উপর অমানুষিক নির্যাতন চালাতো, যার কারণে দুটি সন্তানসহ স্ত্রীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেছিলো। রিপনের সাবেক স্ত্রীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে হলে তিনি জানান, রিপন পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত ছিলো। নিজ গ্রামের এক নারীর সাথে রিপন দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া প্রেম চালিয়ে আসছিলো। আর সেই পরকীয়া প্রেমের প্রতিবাদ করায় অনেকবার নির্যাতনের শিকার হয়েছি। রিপনের অমানুষিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে দুটি সন্তান নিয়ে শেষ পর্যন্ত বিবাহ বিচ্ছেদে বাধ্য হই। রিপনের মাদক ব্যবসার বিষয়ে তিনি বলেন, মাদকের মামলায় গ্রেফতার হয়ে অনেকদিন জেল খেটেছেন রিপন। তিনি মানুষের মুখে রিপনের মাদক বিক্রির কথা শুনেছেন, তবে তিনি কখনও দেখেননি। উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সরকারি মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে থানার উপ-পরিদর্শক জ্যোতিন্ময় জানান, মাদক কারবারি রিপন মোল্লার বিরুদ্ধে মোট কয়টি মামলা রয়েছে এবং কোন মামলায় আদালতের ওয়ারেন্ট রয়েছে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।